29.6 C
Bangladesh
সোমবার, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৫
spot_img

কপ২৯ সম্মেলন: ট্রাম্পের জয়েও জলবায়ু পরিবর্তন রোধে যুক্তরাষ্ট্রের লড়াই অব্যাহত, জানালেন জন পোডেস্টা

কপ২৯ সম্মেলন: জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিশ্রুতি ট্রাম্পের জয়েও অবিচল

আন্তর্জাতিক জলবায়ু সম্মেলন কপ২৯-এর উদ্বোধনী দিনে বাইডেন প্রশাসনের বিশেষ দূত জন পোডেস্টা জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্রের লড়াই চলবে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচিত হওয়ার ফলে যে শঙ্কা তৈরি হয়েছে, তা সত্ত্বেও পোডেস্টা আশ্বাস দেন যে, এই লড়াই থামবে না। “জলবায়ু রক্ষার এই লড়াই একটি দেশ বা একটি রাজনৈতিক চক্রের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়,” বলেন পোডেস্টা। তিনি উল্লেখ করেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলোও জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় নিজ নিজ দায়িত্ব পালন করে যাবে।

পারিস চুক্তিতে ট্রাম্পের সম্ভাব্য প্রভাব

জন পোডেস্টা উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে, নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প আবারও যুক্তরাষ্ট্রকে পারিস চুক্তি থেকে সরিয়ে নিতে পারেন এবং পরিবেশ সুরক্ষার জন্য থাকা নীতিমালা তুলে দিতে পারেন। তবে পোডেস্টা বলেন, “একটি নির্বাচন এই সংকটের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে না, কারণ এটি আমাদের সকলের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করে।”

কার্বন মার্কেট: একটি নতুন পথ

কপ২৯ সম্মেলনে প্রথম দিনেই দেশগুলো একটি কার্বন মার্কেট প্রতিষ্ঠার বিষয়ে ঐক্যমত্যে পৌঁছায়। এর মাধ্যমে উন্নত দেশগুলো উন্নয়নশীল দেশে পরিবেশবান্ধব প্রকল্পে বিনিয়োগ করে তাদের কার্বন নির্গমন কমানোর লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে পারবে। উদাহরণস্বরূপ, ইউরোপের উন্নত দেশগুলো আফ্রিকার দেশগুলোতে বায়ু ও সৌর শক্তি প্রকল্পে বিনিয়োগ করতে পারে, যা তাদের নিজেদের কার্বন পদচিহ্ন কমাতে সহায়তা করবে। যদিও এই মার্কেট নিয়ে কিছুটা সংশয় রয়েছে—বিশেষ করে এটি কতটা কার্যকর হবে এবং এর ফলে কীভাবে নির্গমন কমবে, তা নিয়ে সন্দেহ থেকে গেছে—তবে সফল হলে, বছরে প্রায় ২৫০ বিলিয়ন ডলার পর্যন্ত বিনিয়োগের সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে।

জলবায়ু সংকটের গভীরতা: নতুন বৈজ্ঞানিক সতর্কতা

সম্মেলনের প্রাক্কালে বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা (WMO) এক রিপোর্ট প্রকাশ করেছে, যেখানে বলা হয়েছে ২০২৪ সাল হতে পারে বিশ্বের ইতিহাসে সবচেয়ে উষ্ণ বছর। এই রিপোর্টে আরও বলা হয় যে, মহাসাগরগুলো দ্রুত উষ্ণ হচ্ছে, এবং হিমবাহ গলনের হারও আশঙ্কাজনকভাবে বাড়ছে। কপ২৯-এর সভাপতি মখতার বাবায়েভ উদ্বোধনী বক্তব্যে বলেন, “আমরা ধ্বংসের পথে হাঁটছি। জলবায়ুর এই প্রভাব ভবিষ্যতের জন্য অপেক্ষা করছে না—এটি এখনই বিশ্বের বিভিন্ন অংশে ভয়াবহ প্রভাব ফেলছে।”

অর্থায়নের চ্যালেঞ্জ: উন্নয়নশীল দেশগুলোকে সহায়তার আহ্বান

উন্নয়নশীল দেশগুলোকে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব মোকাবেলায় সহায়তা দিতে অর্থায়নের বিষয়ে জোর দেয়া হয়। জাতিসংঘের জলবায়ু প্রধান সাইমন স্টিয়েল বলেন, “জলবায়ু অর্থায়ন কোনো দান নয়। এটি প্রতিটি দেশের জন্য আত্মরক্ষার অংশ।” উন্নত দেশগুলো উন্নয়নশীল দেশগুলোকে অর্থ সহায়তা দিতে আগ্রহী, তবে তারা আশা করে যে প্রধান উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোও এই প্রচেষ্টায় অংশ নেবে। বিশেষজ্ঞদের মতে, বৈশ্বিক তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখার জন্য বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ দেশই প্রয়োজনীয় হারে নির্গমন কমাতে সক্ষম নয়।

সম্মেলনের মধ্যে আরেকটি সংকট: উচ্চমূল্যের খাবার ও পানীয়

সম্মেলনে যোগ দেওয়া বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধি ও সাংবাদিকরা উচ্চ মূল্যের খাবার ও পানীয় নিয়ে অভিযোগ তুলেছেন। বিবিসির সাংবাদিক আইগুল মেহমান জানান, কনফারেন্স সেন্টারের এক বেলার খাবারের দাম প্রায় ২৪ ডলার (৪১ আজারি মানাত), যা বেশ ব্যয়বহুল। অনেকেই বলেছেন, সম্মেলনে যোগ দিতে আসা উন্নয়নশীল দেশের প্রতিনিধিদের জন্য এসব খরচ যথেষ্ট চ্যালেঞ্জ তৈরি করছে।

CTA: জলবায়ু সংকট মোকাবেলায় আমাদের সবার দায়িত্ব রয়েছে। পরিবেশ রক্ষায় সচেতন হোন, পরিবেশবান্ধব উদ্যোগে অংশ নিন এবং ভবিষ্যৎকে সুরক্ষিত রাখতে এখনই পদক্ষেপ নিন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
spot_img

সর্বশেষ সংবাদ