বিদেশি এলএনজির ফাঁদে বাংলাদেশ: পরিবেশ ও অর্থনীতির জন্য হুমকি
বাংলাদেশে বিদেশি তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) আমদানি এখনো বিদ্যুতের সংকট মেটাতে ব্যর্থ। বরং এটি আমাদের অর্থনীতি ও পরিবেশের জন্য দীর্ঘমেয়াদি ক্ষতির ঝুঁকি তৈরি করছে। কেন আমরা এত বেশি খরচ করে এই বিদেশি জ্বালানির উপর নির্ভরশীল হচ্ছি, যখন আমাদের নিজস্ব দেশেই নবায়নযোগ্য শক্তির বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে? এলএনজির ঝুঁকি
গতকাল প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, নতুন এলএনজি প্রকল্প এবং আমদানি টার্মিনাল তৈরি করতে বাংলাদেশকে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করতে হবে। এই প্রকল্পগুলো শুধু অর্থনৈতিকভাবে ভারী নয়; বরং দেশের মানুষকে বাড়তি বিদ্যুৎ ব্যয়ের চাপেও ফেলবে। আমাদের সবার প্রশ্ন, কেন আমরা এই ব্যয়বহুল পথে হাঁটছি?
বাংলাদেশে নবায়নযোগ্য শক্তির দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে। এক গবেষণায় উঠে এসেছে, ৬২ গিগাওয়াট নবায়নযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন ক্ষমতা অর্জন করলে দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদনক্ষমতা দ্বিগুণ হতে পারে, যা আমাদের চাহিদা পূরণে যথেষ্ট। শুধু সৌরশক্তি থেকেই ২৪০ গিগাওয়াট এবং উপকূলীয় বায়ু থেকে ৩০ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সম্ভাবনা রয়েছে। তাহলে কেন আমরা এই বিশাল সম্ভাবনাকে উপেক্ষা করে বিদেশি এলএনজির ওপর নির্ভরশীল হচ্ছি?
এলএনজি বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো শুধু ব্যয়বহুল নয়, বরং আমাদের পরিবেশের জন্যও মারাত্মক ক্ষতিকর। এসব প্রকল্প থেকে বিপুল পরিমাণে দূষণকারী গ্যাস নির্গমন হবে, যা আমাদের শ্বাসযন্ত্রের রোগ এবং বায়ুদূষণের ঝুঁকি বাড়াবে। বর্তমানে দূষণজনিত সমস্যায় শীর্ষে থাকা বাংলাদেশের জন্য এটি এক চরম হুমকি। এলএনজির ঝুঁকি
বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যখন নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে অগ্রসর হচ্ছে, তখন আমাদেরও একই পথে হাঁটা উচিত। বিশেষজ্ঞদের মতে, এখনই সময় এলএনজি প্রকল্পগুলোকে বাতিল করে নবায়নযোগ্য শক্তিতে বিনিয়োগ বাড়ানোর। আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটি সবুজ এবং টেকসই পৃথিবী রেখে যেতে আমাদের এখনই সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া উচিত।
আমাদের ভবিষ্যৎ নিরাপদ করতে বিদেশি এলএনজির ওপর নির্ভরতা বাদ দিয়ে নবায়নযোগ্য শক্তির দিকে নজর দিন। পরিবেশ ও অর্থনীতিকে বাঁচাতে আমাদের হাতে এটি একটি কার্যকরী ও টেকসই বিকল্প।
Adnan Shahriar
Cheif Editor