29.7 C
Bangladesh
মঙ্গলবার, সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২৫
spot_img

কপ ২৯: জলবায়ু অভিযোজন তহবিল নিশ্চিত করার জোরালো আহ্বান সৈয়দা রিজওয়ানা হাসানের

আজারবাইজানের বাকুতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব জলবায়ু সম্মেলন **কপ-২৯** এ এক জোরালো বার্তা দিয়েছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করতে **শক্তিশালী অভিযোজন তহবিল** গঠনের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, “জলবায়ুর ধাক্কা মোকাবিলায় ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য আর্থিক সহায়তা অত্যন্ত জরুরি। এর অভাবে লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবন বিপন্ন হতে পারে।” জলবায়ু অভিযোজন তহবিল

জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার বাংলাদেশ

বিশ্বব্যাপী জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতির শিকার হওয়া দেশগুলোর তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান শীর্ষে। সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান তার বক্তব্যে তুলে ধরেন কীভাবে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি, অনিয়মিত আবহাওয়া, অতিরিক্ত গরম, বন্যা এবং ঘূর্ণিঝড় এই দেশের লাখ লাখ মানুষের জীবন-জীবিকার ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলছে।

তিনি বলেন, “বিশেষ করে দরিদ্র ও প্রান্তিক জনগোষ্ঠী এই প্রভাবের প্রধান শিকার। তারা তাদের ঘরবাড়ি, ফসলি জমি এবং জীবন-জীবিকার অন্যতম মাধ্যম হারাচ্ছে। জলবায়ুর এ বিরূপ প্রভাব আমাদের **টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি)** অর্জনের পথেও বড় বাধা সৃষ্টি করছে।”

জলবায়ু অভিযোজন তহবিল নিশ্চিত

অর্থায়ন ঘাটতির বড় চ্যালেঞ্জ

জলবায়ু অভিযোজন তহবিলের ঘাটতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, বাংলাদেশে অভিযোজন কার্যক্রম বাস্তবায়নে প্রতি বছর প্রায় **৮.৫ বিলিয়ন ডলার** প্রয়োজন। কিন্তু অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে মাত্র **৩ বিলিয়ন ডলার** সংগ্রহ করা সম্ভব হচ্ছে। এই ঘাটতির ফলে অভিযোজন কার্যক্রম সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করা কঠিন হয়ে পড়ছে। বৈশ্বিক স্তরেও পরিস্থিতি খুব ভালো নয়। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোকে অভিযোজন কার্যক্রমে বছরে প্রায় **৯৮ বিলিয়ন ডলার** প্রয়োজন, যেখানে বৈশ্বিক অভিযোজন তহবিলের বার্ষিক ঘাটতি প্রায় **৩৬৬ বিলিয়ন ডলার।

তিনি জোর দিয়ে বলেন, “উন্নত দেশগুলোর উচিত অভিযোজন তহবিলে আরও বেশি ভূমিকা রাখা। উচ্চ সুদের ঋণ না দিয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোকে দীর্ঘমেয়াদী ও টেকসই বিনিয়োগের মাধ্যমে সহায়তা করতে হবে।”

কপ-২৯ এর মঞ্চ থেকে একটি শক্তিশালী বার্তা

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান এই বার্তা দেন কপ-২৯ সম্মেলনের **’গভর্ন্যান্স ফর স্ট্রেনদেনিং এসডিজি ক্লাইমেট সিনার্জিস’** শীর্ষক অধিবেশনে। এ সময় তিনি বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের মতো একটি বৈশ্বিক সংকট মোকাবিলায় আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং তহবিল সংগ্রহের চেষ্টাগুলোকে আরও সমন্বিত করা প্রয়োজন।”

সম্মেলনের **’ব্লু জোন’-এ** তার বক্তব্য শুনতে উপস্থিত ছিলেন জলবায়ু বিশেষজ্ঞ, নীতিনির্ধারক, এবং বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিরা। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল ও ঝুঁকিপূর্ণ দেশগুলোর জন্য অভিযোজন তহবিল নিশ্চিত করার বিষয়ে তার বক্তব্যে উপস্থিত সবাই একমত হন।

আমাদের কী করণীয়?

জলবায়ু পরিবর্তনের মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সরকার, আন্তর্জাতিক সংস্থা এবং সাধারণ মানুষের একসঙ্গে কাজ করা জরুরি। ব্যক্তিগতভাবে সচেতন হওয়া, পরিবেশবান্ধব জীবনযাপন করা এবং জলবায়ু বিষয়ক সচেতনতা ছড়িয়ে দেওয়া এখন সময়ের দাবি।

আপনার কী মনে হয়? জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে কোন ক্ষেত্রগুলোতে বেশি মনোযোগ দেওয়া উচিত? কমেন্টে আপনার মতামত জানান এবং পরিবেশ সচেতনতা বাড়াতে আমাদের সাথেই থাকুন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
spot_img

সর্বশেষ সংবাদ