সুমেরু অঞ্চল তার অত্যাশ্চর্য প্রাকৃতিক দৃশ্যাবলীর জন্য পরিচিত, কিন্তু গত কয়েক দশক ধরে সেখানকার কঠিন বরফ ভয়ানক গতিতে গলতে শুরু করেছে। জলবায়ু পরিবর্তন যে সত্য এবং তা যে বর্তমানেই ঘটছে, সুমেরু অঞ্চলের বরফ গলে যাওয়া তার অন্যতম বড় নির্দেশক। কিন্তু এটি কেন ঘটছে এবং কেনই বা আমরা এটাকে গুরুত্ব দিবো? সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা
সুমেরীয় বরফ গলে যাওয়ার কারণ কী?
বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি এ সুমেরীয় অঞ্চলের বরফ গলে যাওয়ার প্রাথমিক কারণ। জীবাশ্ম জ্বালানি দহন, বায়ুমন্ডলে গ্রিনহাউজ গ্যাস নির্গমন এবং তাপ আটকে রাখার মতো মানবীয় কর্মকাণ্ড এর জন্য দায়ী। এই আটকে পড়া তাপ সুমেরু অঞ্চলের জন্য খুব ক্ষতিকর, যেখানে অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় দ্বিগুন হারে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে। পৃথিবীর উষ্ণতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বরফ সংকুচিত হয়ে আসছে, যেটা কোন এক সময় সূর্যালোক প্রতিফলিত করতো, যা পৃথিবীপৃষ্ঠের তাপ শোষণ আরও বাড়িয়ে দিচ্ছে।
সুমেরু অঞ্চলের বরফ গলে যাওয়াকে আমরা কেন গুরুত্ব দিবো?
আপনি হয়তো চিন্তা করতে পারেন, সুমেরু অঞ্চল অনেক দূরে- আমার সাথে এর কী সম্পর্ক থাকতে পারে? এর জবাব হচ্ছে খুব ঘনিষ্ট সম্পর্ক! সুমেরীয় বরফ পৃথিবীর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণে বেশ বড় ভূমিকা পালন করে। এখানকার বরফ গলার সাথে সাথে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি পায়, যা উপকূলীয় অঞ্চলে বন্যার জন্য দায়ী। বরফের গলে যাওয়া পৃথিবীব্যাপী সামুদ্রিক বিদ্যুৎ, আবহাওয়ার পরিবর্তন এবং বাস্তুতন্ত্রের উপরও প্রভাব ফেলে। উপরন্তু, বরফ গলে নিঃশেষ হয়ে গেলে তা এর উপর নির্ভরকারী প্রাণী; যেমন মেরু ভল্লুক, সীল এবং সিন্ধু ঘোটকের মতো প্রাণির জন্য ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
সুমেরীয় বরফ গলার বৈশ্বিক প্রভাব কী কী?
সুমেরীয় বরফ গলে যাওয়া কেবলমাত্র একটি পরিবেশ বিষয়ক সমস্যাই নয়, বরং এটি একটি বৈশ্বিক সমস্যা। বরফ গলে যাওয়ার সাথে সাথে নতুন জলপথ তৈরি হয়ে যায়, যা বৈশ্বিক উষ্ণায়নের গতিকে তরান্বিত করে। একইসাথে, গ্রিনহাউজ গ্যাসসমূহের মধ্যে অন্যতম মিথেন গ্যাস হিমায়িত স্থলভাগে আটকে গিয়ে জলবায়ু পরিবর্তনকে আরও তরান্বিত করতে পারে। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা
বরফ গলার গতি কমাতে করণীয় কিছু আছে কি?
হ্যাঁ, আপনি সুমেরু অঞ্চলের বরফ গলার গতি কমাতে পারেন, কিন্তু এটার জন্য একটি সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। কয়েকটি উপায়ে আমরা তা করতে পারিঃ
- নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার বৃদ্ধির মাধ্যমে গ্রিনহাউজ গ্যাসের ব্যবহার কমানো।
- রক্ষণশীল উদ্যোগ সমর্থনের মাধ্যমে সুমেরু অঞ্চলের ঝুঁকিপূর্ণ বাস্তুতন্ত্রকে সংরক্ষণ।
- বন উজাড় হওয়া কমানো এবং টেকসই ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে ণীতি গ্রহণ।
- বিশ্বের সকলের কাছে সুমেরু অঞ্চলের গুরুত্ব উপস্থাপন।
যদিও সমস্যাটা খুব বড়, তবুও ব্যক্তিগত এবং সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনা সম্ভব।
সুমেরু অঞ্চলের বরফ গলে যাওয়া কোন দূরবর্তী ঘটনা নয়, বরং এটি আমাদের সকলের উপর প্রভাব বিস্তারকারীর জন্য মাথাব্যাথার কারণ। সুমেরু অঞ্চলে ঘটে যাওয়া পরিবর্তন পৃথিবীর অনেক বড় পরিবর্তন সাধন করছে এবং এক্ষেত্রে আমাদের সকলেরই কিছু করণীয় আছে। কার্বন নিঃসরণ কমানো, সবুজায়নে গুরুত্বারোপ এবং তথ্য আদান প্রদানের মাধ্যমে আমরা এই মারাত্মক উদ্বেগজনক প্রবণতা কমাতে এবং আমাদের পৃথিবীর ভবিষ্যত সুরক্ষা করতে পারি।