ক্লাইমেট স্মার্ট অ্যাগ্রিকালচারের বাস্তব চিত্র
ক্লাইমেট স্মার্ট অ্যাগ্রিকালচারকে একটি টেকসই সমাধান হিসেবে প্রচার করা হলেও এটি কি আদৌ জলবায়ুর জন্য উপকারী? মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ফরিদা আখতার মনে করেন, এই পদ্ধতিটি আসলে আরও বেশি রাসায়নিক এবং কীটনাশকের ব্যবহারকে উত্সাহিত করছে, যা পরিবেশের জন্য বিপজ্জনক। রাজধানীতে অনুষ্ঠিত একটি মতবিনিময় সভায় তিনি বলেন, “এটি ক্লাইমেট স্মার্ট নয়, বরং ক্লাইমেট ধ্বংসকারী অ্যাগ্রিকালচার।”
ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফুড প্রোডাকশন: সংকটের মূল
সভায় ফরিদা আখতার উল্লেখ করেন যে, ইন্ডাস্ট্রিয়াল ফুড প্রোডাকশন বর্তমানে জলবায়ু সংকটের একটি বড় কারণ। ইউরোপ, আমেরিকা এবং ব্রাজিলের মতো দেশগুলোতে আমাজনের গাছ কেটে বিফ উৎপাদন করা হচ্ছে। এমনকি সয়াবিন, যা মূলত ক্যাটল ফিড হিসেবে উৎপাদিত, তার চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে। এর ফলে আরও বেশি বনভূমি উজাড় হচ্ছে, যা কার্বন নিঃসরণ বাড়িয়ে জলবায়ু পরিবর্তনকে ত্বরান্বিত করছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের দায় কে নেবে?
জলবায়ু পরিবর্তনের আলোচনা সাধারণত পরিবেশ মন্ত্রণালয় পর্যন্ত সীমাবদ্ধ থাকে। তবে ফরিদা আখতার মনে করেন, শিক্ষা, কৃষি, এবং প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের মতো অন্যান্য সেক্টরেরও এই আলোচনায় অংশ নেওয়া উচিত। তিনি বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তন শুধু পরিবেশবিদদের বিষয় নয়; এটি একটি বহুমাত্রিক সমস্যা, যা সমস্ত খাতকে প্রভাবিত করে।”
স্থানীয় গাছ ও পরিবেশ সংরক্ষণ
পরিবেশ রক্ষায় স্থানীয় গাছ লাগানোর উপর জোর দেন তিনি। হাওরে হিজল, সুন্দরবনে কেওরা ও কড়ই, এবং বজ্রপাত থেকে সুরক্ষার জন্য তাল গাছ লাগানোর আহ্বান জানান। একই সঙ্গে শিক্ষার্থীদেরকে এসব গাছ লাগানোর গুরুত্ব শেখানোর প্রয়োজনীয়তার কথাও তুলে ধরেন।
টেকসই কৃষি: পথ কোন দিকে?
সভায় উপস্থিত বক্তারা একমত হন যে, টেকসই কৃষি ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হলে রাসায়নিক নির্ভর কৃষি পদ্ধতির পরিবর্তে স্থানীয় ও প্রাকৃতিক পদ্ধতির উপর জোর দিতে হবে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের দুর্যোগ মোকাবিলার প্রশিক্ষণ দেওয়া এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে সচেতনতা বাড়ানোও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
শিক্ষাব্যবস্থা ও জলবায়ু পরিবর্তন
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. ফরহাদ আলম জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সম্পর্কে শিশুদের শিক্ষা দিতে হবে। স্কুল পর্যায় থেকে শুরু করে দুর্যোগকালীন প্রস্তুতির ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে। তিনি বলেন, “জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে টিকে থাকতে হলে তরুণ প্রজন্মকে সঠিক শিক্ষা দিতে হবে।”
পরিবেশ রক্ষার জন্য আপনার ভূমিকা কী? জলবায়ু পরিবর্তন ও টেকসই কৃষি নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে পোস্টটি শেয়ার করুন। পরিবেশ সংরক্ষণে আপনার মতামত জানিয়ে সক্রিয় ভূমিকা পালন করুন। 🌍 #ক্লাইমেটস্মার্টঅ্যাগ্রিকালচার #জলবায়ুপরিবর্তন #পরিবেশসংরক্ষণ
