27.1 C
Bangladesh
বুধবার, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৫
spot_img

গাছ কাটার আগে নিতে হবে অনুমতি: হাইকোর্টের যুগান্তকারী রায়

গাছ কাটার ওপর হাইকোর্টের রায়

বাংলাদেশের পরিবেশ সুরক্ষায় একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হিসেবে হাইকোর্ট সম্প্রতি একটি রায় দিয়েছে, যেখানে অনুমতি ছাড়া গাছ কাটাকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়েছে। আদালত স্পষ্টভাবে নির্দেশ দিয়েছে যে, গাছ কাটার আগে নির্দিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নেওয়া বাধ্যতামূলক। পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা এবং জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব কমানোর লক্ষ্যে এই নির্দেশনা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। হাইকোর্টের যুগান্তকারী রায়

কেন এই রায় গুরুত্বপূর্ণ?

বর্তমানে দেশের পরিবেশ ক্রমাগত অবনতি ঘটছে। দিন দিন বাড়ছে গাছ কাটার পরিমাণ, যা দেশের তাপমাত্রা বৃদ্ধি ও পরিবেশের ভারসাম্য নষ্টের একটি প্রধান কারণ। হাইকোর্টের এই রায়ে বলা হয়েছে, যেকোনো গাছ কাটার আগে পরিবেশ বিশেষজ্ঞ, পরিবেশবাদী, এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিতে হবে। এমনকি সামাজিক বনায়নের অধীনে রোপিত গাছও কাটার অনুমতি দেওয়া হবে না; বরং রোপণকারীকে গাছের সমমূল্যের টাকা প্রদান করতে হবে। হাইকোর্টের যুগান্তকারী রায়

গাছ কাটা নিয়ন্ত্রণে গঠিত হবে কমিটি

হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছে, গাছ কাটার প্রয়োজন হলে জেলা ও উপজেলা পর্যায়ে একটি সাত সদস্যের কমিটি গঠন করতে হবে। এই কমিটিতে থাকবে পরিবেশ বিশেষজ্ঞ, স্থানীয় প্রশাসন, এবং সামাজিক প্রতিনিধিরা। তাদের অনুমোদন ছাড়া গাছ কাটার কোনো উদ্যোগ নেওয়া যাবে না।

পরিবেশ সংরক্ষণে এই রায়ের প্রভাব

এই সিদ্ধান্ত বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশের পরিবেশ সংরক্ষণে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আসবে। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, গাছ কাটার ওপর নিয়ন্ত্রণ থাকলে জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতিকর প্রভাব কিছুটা হলেও হ্রাস পাবে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি রোধ করা, বায়ু মান উন্নত করা এবং প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষা করার ক্ষেত্রে এটি একটি বড় পদক্ষেপ।

জলবায়ু পরিবর্তন ও মানুষের দায়িত্ব

গাছ আমাদের পরিবেশ ও জীবনের অপরিহার্য অংশ। তবে জনসংখ্যা বৃদ্ধি, নগরায়ণ, এবং উন্নয়নের নামে নির্বিচারে গাছ কাটা পরিবেশের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে বাংলাদেশের মতো দেশগুলোতে তাপমাত্রা বৃদ্ধি, বন্যা, খরা, এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ বেড়ে চলেছে। এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় গাছ সংরক্ষণ ও বনায়নের বিকল্প নেই।

সামাজিক বনায়ন বিধিমালায় পরিবর্তনের প্রস্তাব

হাইকোর্ট আরও নির্দেশ দিয়েছে যে, সামাজিক বনায়ন বিধিমালা ২০০৪ অনুযায়ী রোপিত গাছ কাটা যাবে না। বরং যিনি গাছ রোপণ করেছেন তাকে গাছের মূল্যের সমপরিমাণ অর্থ প্রদান করতে হবে। এটি বনায়নের প্রতি মানুষের আগ্রহ বাড়াবে এবং পরিবেশ রক্ষায় ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে।

ভবিষ্যৎ পরিবেশ রক্ষার জন্য উদ্যোগ

এই রায় বাস্তবায়নে সরকার, পরিবেশবাদী সংগঠন এবং সাধারণ মানুষের সম্মিলিত উদ্যোগ প্রয়োজন। পরিবেশ সংরক্ষণে জনগণের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং দায়িত্বশীল আচরণ একান্ত জরুরি।

শেষ কথা

পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তনের বর্তমান পরিস্থিতিতে এই রায় একটি সময়োপযোগী পদক্ষেপ। গাছ কাটার ওপর নিয়ন্ত্রণ না থাকলে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হবে এবং এর প্রভাব পড়বে আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে। আসুন, আমরা সবাই মিলে এই উদ্যোগকে সফল করি এবং পরিবেশ রক্ষায় দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করি।

আপনার মতামত জানাতে কমেন্ট করুন এবং পরিবেশ সুরক্ষার এই গুরুত্বপূর্ণ বার্তাটি শেয়ার করুন। গাছ বাঁচান, পরিবেশ বাঁচান!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
spot_img

সর্বশেষ সংবাদ