ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বিজয়নগর উপজেলায় শশই গ্রামে তিতাস নদ থেকে বালু উত্তোলন ও মাটি কাটার বিরুদ্ধে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই অবৈধ কার্যক্রমের কারণে কৃষিজমি ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে, যা তাদের জীবনযাত্রার জন্য বিপদের সৃষ্টি করেছে। বালু উত্তোলন ও মাটি কাটার
এদিন, বুধন্তি ইউনিয়নের শশই গ্রামের তিতাস নদীর পাড়ে অনুষ্ঠিত এই মানববন্ধনে কৃষকরা এবং স্থানীয়রা প্ল্যাকার্ড ও ব্যানার হাতে অংশ নেন, যাতে লেখা ছিল “জমিন থাকলে কৃষক বাঁচবে,” “মুখের ভাত কেড়ে নেবেন না,” “বুকের ওপর ড্রেজার চলাবেন না,” এবং “কৃষক বাঁচলে দেশ বাঁচবে।” প্রতিবাদকারীরা দাবি করেছেন যে, স্থানীয় একটি প্রভাবশালী মহল অবৈধভাবে বালু উত্তোলন ও মাটি কাটছে, যা শুধু পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর নয়, বরং তাদের কৃষিজমির ক্ষতি করছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ:
মানববন্ধনে অংশ নেওয়া স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন যে, কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তি তিতাস নদ থেকে ড্রেজার দিয়ে বালু উত্তোলন করছেন এবং এক্সকাভেটর দিয়ে নদীর পাড় থেকে মাটি কেটে বিক্রি করছেন। এতে কৃষিজমির বড় ধরনের ক্ষতি হচ্ছে এবং যদি এই কার্যক্রম অব্যাহত থাকে, তবে কৃষিজমি নদীতে বিলীন হয়ে যেতে পারে।
এছাড়া, প্রতিবাদকারীরা জানিয়েছেন যে, তাদের প্রতিবাদ করার ফলে তারা বিভিন্ন ধরনের হুমকির শিকার হচ্ছেন এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলার ভয়ও দেখানো হচ্ছে। এক কৃষক বলেন, “বালু না দিলে আমার খেত ভেঙে যাবে। আমি জান দিয়ে রাজি, কিন্তু বালু দিয়ে রাজি না।”
অভিযোগের ব্যাপারে প্রশাসনিক অবস্থান:
এদিকে, ৫ ফেব্রুয়ারি বুধন্তি ইউনিয়ন থেকে জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছিল, যাতে তিতাস নদে বালু উত্তোলন এবং সোনাই নদে পাড়ের মাটি কাটার কার্যক্রম বন্ধ করা হয়। যদিও স্থানীয় বিএনপি নেতারা এই কার্যক্রমের পেছনে রাজনৈতিক সম্পৃক্ততার কথা দাবি করছেন, উপজেলা প্রশাসন জানাচ্ছে যে তাদের কাছে এরকম কোনো লিখিত অভিযোগ বা অনুলিপি আসেনি। বালু উত্তোলন ও মাটি কাটার
অভিযোগের দিক থেকে প্রশ্ন:
উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য জানান, সড়ক নির্মাণের জন্য বালু উত্তোলনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু কৃষকদের দাবি অনুযায়ী এটি অবৈধ কার্যক্রম হতে পারে। অন্যদিকে, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) জানিয়েছে, তাদের কোনো খননের প্রকল্প বিজয়নগরে নেই।
পরিবেশের ক্ষতি ও কৃষিজমির রক্ষা:
এটি স্পষ্ট যে, তিতাস নদ থেকে বালু উত্তোলন এবং মাটি কাটার ফলে কৃষিজমির পাশাপাশি পরিবেশও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। স্থানীয় জনগণের প্রতিবাদ এটির বিরুদ্ধে সচেতনতা তৈরি করছে, যাতে প্রশাসন দ্রুত ব্যবস্থা নেবে।
এই প্রতিবাদ আন্দোলন একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন তুলে ধরছে: কৃষক ও পরিবেশের ক্ষতির বিরুদ্ধে সরকারের দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত, যাতে এই ধরনের অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ হয় এবং ভবিষ্যতে আরও ক্ষতি না হয়।
প্রতিবাদকারীরা আশা করছেন যে প্রশাসন দ্রুত এই কার্যক্রম বন্ধ করবে এবং কৃষকদের জীবন রক্ষা করবে।