30.5 C
Bangladesh
সোমবার, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০২৫
spot_img

তিস্তার পানি ফিরিয়ে আনার আন্দোলন: রাতভর সংগ্রাম

বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের তিস্তা নদীর তীরে চলছে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলন, যার লক্ষ্য নদীটির পানির সরবরাহ পুনরুদ্ধার করা। ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হওয়া এই আন্দোলনটি ১৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত চলবে, যেখানে হাজার হাজার মানুষ অংশ নিয়েছে। তারা দাবি করছে, তিস্তা নদী থেকে তাদের জীবিকা রক্ষার জন্য পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হোক। রাতভর সংগ্রাম

এই আন্দোলনটি মূলত নদী ও তার পারিপার্শ্বিক অঞ্চলের কৃষকদের সংকটের প্রতি সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পরিচালিত হচ্ছে। আন্দোলনকারীরা জানাচ্ছেন, দীর্ঘদিন ধরে পানি সংকটের কারণে তারা তাদের জমি চাষাবাদ করতে পারছেন না, এবং এই সমস্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। তাই, তাদের দাবি—তিস্তা নদী থেকে যথাযথ পানি সরবরাহ নিশ্চিত করা হোক।

আন্দোলনের পটভূমি: তিস্তা নদী এবং পানি সংকট

তিস্তা নদী বাংলাদেশের গুরুত্বপূর্ণ নদীগুলির মধ্যে একটি, এবং নদীটি উত্তরাঞ্চলের কৃষি নির্ভর জনগণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ জীবনধারণের উৎস। তবে সম্প্রতি নদীটির পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা, বিশেষ করে মৌসুমি বন্যার পর পানি সরবরাহের অভাব, বৃহত্তর সংকট সৃষ্টি করেছে। বন্যার সময় নদী পানি বেড়ে গিয়ে ক্ষতিসাধন করে, আর তার পরবর্তী সময়ে পানি না পাওয়ার কারণে কৃষকদের ফসলের ক্ষতি হচ্ছে। রাতভর সংগ্রাম

এই পরিস্থিতি গভীর উদ্বেগ সৃষ্টি করেছে, কারণ কৃষকরা আবাদী জমি হারানোর আশঙ্কায় রয়েছেন। অনেকেই আশংকা প্রকাশ করেছেন যে, এভাবে চলতে থাকলে তাদের জীবিকা অনিশ্চিত হয়ে পড়বে।

রাতের আন্দোলন: তিস্তা নদী রক্ষায় লাখো মানুষের অবস্থান

আজও তিস্তা নদী তীরে হাজার হাজার মানুষ দিন-রাত অবস্থান করছেন, তাদের প্রতিবাদ এবং দাবি জানাতে তাঁবু তৈরি করে সেখানে রাত কাটাচ্ছেন। এই দীর্ঘস্থায়ী অবস্থান কর্মসূচি চলাকালীন, স্থানীয়রা তিস্তাপারের বিভিন্ন জায়গায় খাবারের দোকান এবং স্থানীয় শিল্পের আয়োজনও করেছে—যেমন নাটক, ভাওয়াইয়া গান, জারিগান, যা আন্দোলনের মাধ্যমে তাদের বার্তা পৌঁছানোর চেষ্টা করছে।

এমন একটি দৃশ্যের মধ্যে, তিস্তা নদী রক্ষায় একতাবদ্ধ হয়ে একে অপরের প্রতি সহমর্মিতা ও সমর্থন জানিয়ে চলেছেন আন্দোলনকারীরা। রাত জেগে কাজের ফাঁকে তারা একে অপরের সাহস যোগাচ্ছেন এবং নদীর সুরক্ষার জন্য সরকারের প্রতি দাবিগুলি তুলে ধরছেন।

“জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই” আন্দোলনের বার্তা

তিস্তা নদী রক্ষায় এই আন্দোলন মূলত নদীর পানি প্রবাহ ফিরিয়ে আনার জন্য সংগঠিত হয়েছে। আন্দোলনের অংশগ্রহণকারীরা জানাচ্ছেন যে, তারা তাদের জীবন রক্ষার জন্য এই আন্দোলন করছেন, কারণ পানি না পাওয়া তাদের জমি ও ফসলের জন্য বিপদ ডেকে আনছে। তারা একে অপরের পাশে দাঁড়িয়ে নিজেদের দাবি উত্থাপন করছেন এবং দৃঢ়ভাবে সরকারকে নিজেদের দাবি মেনে নেওয়ার আহ্বান জানাচ্ছেন।

আন্দোলনটি বিস্তৃত হচ্ছে: আরও কর্মসূচি আসছে

বর্তমানে, আন্দোলনটি তিস্তা নদী অঞ্চলের ১১৫ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে ১১টি পয়েন্টে চলছে, এবং আরও বেশ কয়েকটি স্থান থেকে আন্দোলনে যোগ দেওয়া হচ্ছে। আন্দোলনকারীরা জানিয়েছে, তাদের এই কর্মসূচি আরও কিছুদিন ধরে চলতে পারে, যাতে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করা যায় এবং তিস্তা নদীর পানি সরবরাহের বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

এদের মধ্যে কিছু স্থানীয় শিল্পী ও সংস্কৃতিকর্মী এই আন্দোলনে অংশ নিয়ে স্থানীয় লোকগানের মাধ্যমে বার্তা পৌঁছানোর চেষ্টা করছেন। “জাগো বাহে তিস্তা বাঁচাই” এই স্লোগানটি এখন আন্দোলনের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে।

তিস্তার পানির সংকটের প্রতিকার: ভবিষ্যত পরিকল্পনা

এখন সময় এসেছে সরকারের পক্ষ থেকে তিস্তা নদীর পানি সংকট মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়ার। আন্দোলনকারীরা চান, তিস্তার পানি প্রবাহের ওপর আরও শক্তিশালী নজরদারি করা হোক এবং সংকট সমাধানে সহায়ক প্রকল্প চালু করা হোক।

এই আন্দোলনটি শুধুমাত্র এক অঞ্চলের নয়, বরং তিস্তা নদীর পাশের সকল এলাকার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সংকটের সমাধানের পন্থা খুঁজে বের করার তাগিদ দেয়।

Call-to-Action (CTA): আপনি কি মনে করেন, তিস্তা নদী রক্ষার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া উচিত? আপনার মতামত শেয়ার করতে মন্তব্য করুন।

#তিস্তা_নদী #পানির_দাবি #পরিবেশ #জলবায়ু

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
spot_img

সর্বশেষ সংবাদ