বাংলাদেশের লক্ষ্মীপুর জেলার রামগতি ও কমলনগর উপজেলার ৫৮টি অবৈধ ইটভাটা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। গত ৪ মার্চ হাইকোর্টের বিচারপতি ফাহমিদ কাদের ও মুবিনা আসাফের বেঞ্চ এই নির্দেশনা প্রদান করেন, যা পরিবেশগত সংকট ও জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে। অবৈধ ইটভাটা বন্ধের নির্দেশ
ইটভাটা এবং পরিবেশ সংকট:
ইটভাটাগুলি পরিবেশের ওপর অত্যন্ত নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, বিশেষত যখন তা অবৈধভাবে পরিচালিত হয়। লক্ষ্মীপুরের রামগতি এবং কমলনগর উপজেলার বেশিরভাগ ইটভাটা কাঠ ও অন্যান্য প্রাকৃতিক উৎস ব্যবহার করে আগুন জ্বালানোর কাজ করে, যা বায়ু দূষণ সৃষ্টি করে। অবৈধ ইটভাটাগুলি আইনের বিরুদ্ধে গিয়ে পরিবেশে ব্যাপক ক্ষতি সাধন করছে এবং তা স্থানীয় বাস্তুসংস্থানের জন্য বিপদজনক হয়ে দাঁড়িয়েছে।
পরিবেশবিদরা ইতিমধ্যে এই সমস্যা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। বিশেষ করে রামগতি উপজেলায় ৩৬টি অবৈধ ইটভাটা কিভাবে ছাড়পত্র পেল, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। তিনি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে এ বিষয়ে জবাবদিহি করতে বলেন।
বনজ সম্পদ এবং জলবায়ু পরিবর্তন:
এমন অবৈধ ইটভাটা বনজ সম্পদের অব্যাহত সংকোচন ও জলবায়ু পরিবর্তনের একটি বড় কারণ। কাঠ ও অন্যান্য বনজ দ্রব্য ব্যবহার করে জ্বালানি হিসাবে ব্যবহার করা হচ্ছে, যা বনাঞ্চল ধ্বংস ও কার্বন নিঃসরণ বাড়াচ্ছে। এর ফলে গাছপালা ও জীববৈচিত্র্যের ওপর মারাত্মক ক্ষতি সাধিত হচ্ছে, যার ফলস্বরূপ জলবায়ু পরিবর্তন ত্বরান্বিত হচ্ছে। অবৈধ ইটভাটা বন্ধের নির্দেশ
আইনি পদক্ষেপ ও সরকারের ভূমিকা:
হাইকোর্টের নির্দেশ, যেখানে অবৈধ ইটভাটাগুলির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তা একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। লক্ষ্মীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক হারুন অর রশিদ পাঠান জানিয়ে দিয়েছেন, অবৈধ ইটভাটাগুলি বন্ধ করার জন্য তারা বিভিন্ন অভিযান পরিচালনা করেছেন। তবে দীর্ঘমেয়াদী সমাধান নিশ্চিত করতে সরকারের আরো কার্যকর পদক্ষেপ প্রয়োজন।
পরিবেশ রক্ষায় অবিলম্বে পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি:
এই পরিস্থিতি থেকে পরিত্রাণ পেতে হলে, সরকারের পাশাপাশি স্থানীয় বাসিন্দা ও ব্যবসায়ীদেরও সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে হবে। বনাঞ্চল ও জলবায়ু পরিবর্তন রোধে ইটভাটা পরিচালনার ক্ষেত্রে সচেতনতা বাড়ানো, অবৈধ ইটভাটা বন্ধে কার্যকর আইন প্রণয়ন এবং আরও বেশি বৃক্ষরোপণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে এই সংকট মোকাবেলা করা সম্ভব।
শেষ কথা:
লক্ষ্মীপুরে অবৈধ ইটভাটাগুলি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত পরিবেশ রক্ষায় একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ হতে পারে, তবে এর সাথে সংশ্লিষ্ট আইন প্রয়োগ, সমাজের সচেতনতা এবং সরকারের যথাযথ নজরদারি অপরিহার্য। পরিবেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তন রোধে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক, যা অন্য এলাকাতেও অনুসরণ করা উচিত।
Call to Action: আপনার মতামত জানাতে অথবা পরিবেশ রক্ষায় আরও জানার জন্য আমাদের পোস্টে মন্তব্য করুন এবং বিষয়টি শেয়ার করুন।