পরিবেশ রক্ষার দাবিতে সচেতন নাগরিকদের আন্দোলন
রাজশাহী টেক্সটাইল মিলস চত্বরে শতাধিক গাছ কেটে ফেলা ও একটি পুকুর ভরাটের প্রতিবাদে স্থানীয় বাসিন্দা ও পরিবেশকর্মীরা মানববন্ধন করেছেন। সোমবার বেলা ১১টায় রাজশাহী নগরের ‘বরেন্দ্র ইয়ুথ ফোরাম ও সবুজ সংহতি’র উদ্যোগে এই কর্মসূচি পালিত হয়। পরে তারা জেলা প্রশাসকের কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন, যাতে মিল চত্বরের সবুজায়ন ও জলাভূমি সংরক্ষণের দাবি জানানো হয়। শতাধিক গাছ কাটা
অবৈধ বৃক্ষনিধন ও জলাভূমি ধ্বংসের অভিযোগ
স্থানীয়রা জানিয়েছেন, রাজশাহী টেক্সটাইল মিলস চত্বরে আগে প্রচুর গাছপালা ও একটি বিশাল পুকুর ছিল, যা পরিবেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। কিন্তু সম্প্রতি সেখানে নির্বিচারে গাছ কাটা হয়েছে এবং পুকুরটি মাটি দিয়ে ভরাট করা হয়েছে। পরিবেশবাদীদের মতে, এটি শুধু রাজশাহীর সবুজায়নের ক্ষতি করছে না, বরং জলবায়ুর ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
বক্তারা বলেন, কিছুদিন আগেও নওদাপাড়ার বন বিভাগের প্রায় ২০৫টি গাছ কাটা হয়েছিল। একইভাবে নগরীর বিভিন্ন এলাকায় অক্সিজেন সরবরাহকারী বৃক্ষ ধ্বংস করা হচ্ছে। এসব কর্মকাণ্ড পরিবেশের ওপর ভয়াবহ প্রভাব ফেলবে এবং নগরীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হয়ে উঠবে। শতাধিক গাছ কাটা
পরিবেশ রক্ষায় প্রশাসনের হস্তক্ষেপ প্রয়োজন
মানববন্ধনে বক্তারা সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও স্থানীয় প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। তারা দাবি করেন, পরিবেশ রক্ষায় একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে এই বৃক্ষনিধন ও পুকুর ভরাটের ঘটনার সঠিক তদন্ত করতে হবে। সেই সঙ্গে, যারা এই কাজে জড়িত, বিশেষ করে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির অসাধু কর্মকর্তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।
এছাড়াও, তারা অবিলম্বে ভরাট করা পুকুরটি পুনরুদ্ধার করে আগের অবস্থায় ফিরিয়ে আনার দাবি জানান। পাশাপাশি কাটা গাছের স্থানে দেশি প্রজাতির বনজ, ফলদ ও ঔষধি বৃক্ষ রোপণের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়।
মানববন্ধনে বিভিন্ন সংগঠনের অংশগ্রহণ
এই মানববন্ধনে পরিবেশবাদী সংগঠন, স্থানীয় বাসিন্দা ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা অংশ নেন। তারা বলেন, যদি এখনই সচেতন হয়ে ব্যবস্থা নেওয়া না হয়, তাহলে রাজশাহীসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পরিবেশগত বিপর্যয় নেমে আসবে।
বিশিষ্ট পরিবেশবিদ ও সামাজিক সংগঠনের নেতারা বলেন, “গাছ কাটা ও জলাভূমি ধ্বংস কেবল একটি এলাকার সমস্যা নয়, এটি জাতীয় পর্যায়ের পরিবেশগত সংকট তৈরি করতে পারে।”
উপসংহার
রাজশাহীর মতো শহরগুলোতে পরিবেশ ধ্বংসের বিরুদ্ধে সচেতন নাগরিকদের সোচ্চার হওয়া জরুরি। প্রশাসনকে শক্ত হাতে আইন প্রয়োগ করতে হবে এবং পরিবেশ রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে।
আপনার মতামত কী? রাজশাহীর সবুজায়ন রক্ষা করতে আমাদের আরও কী করা উচিত? কমেন্টে জানান এবং পরিবেশ রক্ষার আন্দোলনে অংশ নিন!