32.7 C
Bangladesh
শনিবার, জুন ৭, ২০২৫
spot_img

পরিবেশ রক্ষায় সেনাবাহিনীর মাধ্যমে শুভাঢ্যা খাল পুনঃখনন

কেরানীগঞ্জের শুভাঢ্যা খালটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জলপথ, যা বুড়িগঙ্গা ও ধলেশ্বরী নদীর সাথে যুক্ত। কিন্তু পরিবেশ দূষণ এবং দখলের কারণে এটি প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। দীর্ঘদিন ধরে এই খালের পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ার কারণে জলাবদ্ধতা ও পরিবেশ দূষণের সমস্যা তৈরি হয়েছে। তবে, এবার সেনাবাহিনী এই খালটি পুনঃখননের কাজ করবে, যা কেবল পানি প্রবাহ ফিরিয়ে আনার জন্যই নয়, পরিবেশের জন্যও একটি বড় পদক্ষেপ। সেনাবাহিনীর মাধ্যমে শুভাঢ্যা খাল পুনঃখনন

কারণ কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ?

শুভাঢ্যা খালটি কেবল কেরানীগঞ্জের জন্য নয়, ঢাকা শহরের পরিবেশের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই খালটি দুটি বড় নদী বুড়িগঙ্গা এবং ধলেশ্বরীর সাথে যুক্ত, যা শহরের পানি প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করে। কিন্তু দখল এবং ময়লা-আবর্জনার কারণে এর পানিপ্রবাহ সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গেছে, ফলে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। এই খাল পুনঃখননের মাধ্যমে শুধু পানিপ্রবাহ ফিরবে না, পরিবেশও পরিষ্কার হবে, যা দীর্ঘমেয়াদে জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশ সুরক্ষায় সাহায্য করবে। সেনাবাহিনীর মাধ্যমে শুভাঢ্যা খাল পুনঃখনন

সেনাবাহিনীর মাধ্যমে খাল খনন: সরকারের পদক্ষেপ

সরকারের তরফে পানিসম্পদ এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তনবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান জানিয়েছেন, খালটির পুনঃখননের জন্য ৩১৭ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে এবং সেনাবাহিনী এই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। তিনি আরও বলেন, “এটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। খালটি পুনঃখনন করলে কেবল পানি প্রবাহ ফিরে আসবে না, বরং এর পাশের অবৈধ দখলদারিত্ব ও ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার হবে।”

রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, “যতক্ষণ পর্যন্ত জনগণ সচেতন হবে না, ততক্ষণ সরকারের একা কাজ করা সম্ভব নয়। আমাদের খালগুলো সুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব আমাদের সবার।”

খাল পুনঃখনন শেষে কী সুবিধা হবে?

এই প্রকল্পের মূল উদ্দেশ্য হলো খালের পানিপ্রবাহ ফিরিয়ে আনা এবং পরিবেশ সুরক্ষা নিশ্চিত করা। খাল খননের মাধ্যমে জলাবদ্ধতা ও পরিবেশ দূষণের সমস্যা কমানো যাবে, যা দীর্ঘমেয়াদে ঢাকার পরিবেশকে সচল রাখবে। এছাড়াও, খালের দুই পাশের অবৈধ স্থাপনা অপসারণের জন্য ঢাকা জেলা প্রশাসন ইতিমধ্যে পদক্ষেপ নিয়েছে।

এছাড়া, খালটির পাশে হাঁটার জায়গা তৈরি করা হবে, যাতে এটি ভবিষ্যতে দখল হয়ে না যায়। সব মিলিয়ে, এই প্রকল্পের মাধ্যমে কেবল পরিবেশই নয়, স্থানীয় মানুষের জীবনযাত্রা ও স্বাস্থ্যেও ইতিবাচক প্রভাব পড়বে।

জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশের ওপর প্রভাব

শুভাঢ্যা খাল পুনঃখনন প্রকল্পটি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। জলবায়ু পরিবর্তনজনিত কারণে নদী এবং খালগুলোর অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে, যা জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশের জন্য বিপদজনক। এই ধরনের প্রকল্পগুলি শুধু পরিবেশ রক্ষা করে না, বরং স্থানীয় জনগণের স্বাস্থ্যের ওপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

সেই সাথে, এই প্রকল্পটি শহরের জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি ব্যবস্থাপনা কৌশলগুলোর উন্নতি ঘটাবে। এর মাধ্যমে, মাটির নিচের পানি স্তরের ভারসাম্য বজায় রাখা এবং পানি সংকটের মোকাবিলা করা সম্ভব হবে।

শেষ কথা: সরকারের জন্য নতুন এক চ্যালেঞ্জ

যদিও এই প্রকল্পটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তবুও এর সাফল্য নির্ভর করবে জনগণের সহযোগিতার ওপর। প্রকল্পটি সফলভাবে বাস্তবায়িত হলে, এটি কেবল কেরানীগঞ্জ বা ঢাকা শহরের জন্যই নয়, সারা দেশের জন্য একটি মডেল হতে পারে। সেনাবাহিনীর মাধ্যমে শুভাঢ্যা খাল পুনঃখনন

এখন, আমাদের সবার দায়িত্ব হলো সরকারের উদ্যোগকে সফল করতে সচেতন থাকা। সরকার কাজ করবে, তবে আমাদের সকলের দায়িত্ব হলো পরিবেশ সুরক্ষায় সহযোগিতা করা। খালটি পুনঃখনন করা হচ্ছে আমাদের ভবিষ্যতের জন্য, যাতে আমরা স্বাস্থ্যকর পরিবেশে বাস করতে পারি।

আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না! আমাদের প্রবন্ধটি কেমন লাগলো? আপনি কি মনে করেন এই প্রকল্পটি সফল হবে? কমেন্টে আপনার ভাবনা শেয়ার করুন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
spot_img

সর্বশেষ সংবাদ