নাটোরে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে কৃষকদের বিক্ষোভ জলবায়ু পরিবর্তন ও অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে সাধারণ মানুষের জাগরণ নাটোরের লালপুর উপজেলায় পদ্মাতীরবর্তী চর জাজিরা ও মহাদিয়াড় মৌজায় অবৈধভাবে বালু তোলার প্রতিবাদে স্থানীয় কৃষকরা বিক্ষোভ করেছেন। আজ বুধবার দুপুরে তাঁরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয় ঘেরাও করে এই প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করেন।
অবৈধ বালু উত্তোলন ও পরিবেশ বিপর্যয়ের শঙ্কা
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, মেসার্স রোকন এন্টারপ্রাইজ নামের একটি প্রতিষ্ঠান প্রায় দুই বছর আগে চর জাজিরা ও মহাদিয়াড় মৌজার বালুমহাল ইজারা নেয়। কিন্তু, ইজারার শর্ত লঙ্ঘন করায় জেলা প্রশাসন ওই ইজারা বাতিল করে দেন। এরপরও, ইজারাদারের লোকজন অবৈধভাবে বালু তোলা অব্যাহত রেখেছে, যা পদ্মার বাঁধ ও কৃষিজমির জন্য মারাত্মক হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, বর্ষার পর বালু তোলার কারণে নুরুল্লাপুর গ্রামের বহু বাড়িঘর ভেঙে যেতে পারে। নাটোরে অবৈধ বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে কৃষকদের বিক্ষোভ
কৃষকদের প্রতিবাদ ও দাবিদাওয়া
কৃষকরা দীর্ঘদিন ধরে এই অবৈধ কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানিয়ে আসছেন। আজ তাঁরা ইউএনও কার্যালয়ে মানববন্ধন করে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান। নুরুল্লাপুর গ্রামের বাসিন্দা জালাল উদ্দিন সরদার, জিয়াউল হক সরদার, মমিন উদ্দিন ও শুকুর প্রামাণিক বিক্ষোভে বক্তব্য দেন। জালাল উদ্দিন সরদার বলেন, “ইজারা বাতিল হলেও মেসার্স রোকন এন্টারপ্রাইজের বিরুদ্ধে প্রশাসন কার্যকর ব্যবস্থা নেয়নি। তাঁরা দিনরাত অবৈধভাবে পদ্মার চরে বালু তুলে বিক্রি করছে। এভাবে চললে কোনো কৃষিজমি আর নদীতীরে থাকবে না।”
প্রশাসনের প্রতিক্রিয়া ও পদক্ষেপ
লালপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেদী হাসান জানান, অভিযুক্ত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, “তত দিন পর্যন্ত সবাইকে ধৈর্য ধরতে হবে।” অন্যদিকে, মেসার্স রোকন এন্টারপ্রাইজের মালিক রোকনুজ্জামানের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও, তাঁর ফোন বন্ধ পাওয়া গেছে।
জলবায়ু পরিবর্তন ও আমাদের করণীয়
অবৈধ বালু উত্তোলন পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর। এই ধরণের কার্যক্রম জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবকে আরও প্রকট করে তুলতে পারে। সাধারণ মানুষকে সচেতন হতে হবে এবং পরিবেশ রক্ষায় একত্রিত হতে হবে।
উপসংহার
জলবায়ু পরিবর্তন আমাদের জন্য এক বড় চ্যালেঞ্জ। পরিবেশ রক্ষা ও অবৈধ কর্মকাণ্ড বন্ধে সকলের ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। এই প্রতিবাদের মাধ্যমে লালপুরের মানুষ দেখিয়েছে, যেকোনো অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোই সমাজের দায়িত্ব।
আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না! জলবায়ু পরিবর্তন ও পরিবেশ রক্ষায় আপনার কী ভাবনা? মন্তব্যে শেয়ার করুন।