ইটভাটা আমাদের জীবনের গুরুত্বপূর্ণ অংশ। তবে সঠিক নিয়ম মেনে না চললে, এগুলো পরিবেশের জন্য বড় বিপদ হয়ে দাঁড়ায়। সাভারের আমিনবাজারের চাঁনপুর এলাকায় পরিবেশ অধিদপ্তরের অনুমোদন ছাড়া পরিচালিত একটি ইটভাটা সম্প্রতি গুঁড়িয়ে দিয়েছে উপজেলা প্রশাসন।
চাঁনপুর এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে অনুমোদন ছাড়া পরিচালিত এইচএমবি নামের ইটভাটায় অভিযান চালান সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক। বৈধ কোনো কাগজপত্র না দেখাতে পারায় ভাটাটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়।
কেন ইটভাটা পরিবেশের জন্য হুমকি?
ইটভাটা একদিকে যেমন উন্নয়নের অংশ, অন্যদিকে নিয়ম বহির্ভূত হলে তা পরিবেশের ওপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে।
পরিবেশের ক্ষতির ধরন
১. বায়ু দূষণ:
ইটভাটার ধোঁয়া এবং বিষাক্ত গ্যাস বাতাসকে দূষিত করে। এতে শ্বাসকষ্টসহ নানা রোগ বাড়ছে।
২. জলবায়ু পরিবর্তন:
ইটভাটায় কাঠ ও নিম্নমানের কয়লা ব্যবহারে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গত হয়, যা জলবায়ু পরিবর্তনের হার বাড়িয়ে তোলে।
৩. মাটি ধ্বংস:
ইট তৈরির জন্য কৃষি জমির মাটি কেটে নেওয়া হয়, যা খাদ্য উৎপাদনের জন্য মারাত্মক হুমকি।
৪. বনভূমি ক্ষতি:
ইটভাটার জ্বালানি সরবরাহ করতে বনাঞ্চল ধ্বংস করা হয়। এতে বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট হয়।
প্রশাসনের পদক্ষেপ
সাভার উপজেলা প্রশাসনের অভিযানে শুধু একটি ইটভাটা ধ্বংস হয়নি, এটি একটি বার্তা দিয়েছে—পরিবেশ রক্ষায় আইন মানা জরুরি।
অভিযানের প্রেক্ষাপট
সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জানান, আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী অবৈধ ইটভাটা বন্ধে নিয়মিত অভিযান চলছে। এই উদ্যোগ পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
অভিযানে উপস্থিত ছিলেন
অভিযানে অংশগ্রহণ করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার এস এম রাসেল ইসলাম, থানা পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস এবং স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা।
সমাধানের পথ
অবৈধ ইটভাটা বন্ধ করে পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি।
করণীয়
১. আইনের কঠোর প্রয়োগ:
অবৈধ ইটভাটা নির্মাণকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে।
২. পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি:
কম জ্বালানি ব্যবহার করে ইট উৎপাদনের প্রযুক্তি গ্রহণ করতে হবে।
৩. সচেতনতা বৃদ্ধি:
স্থানীয় জনগণকে অবৈধ ইটভাটার ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে জানাতে হবে।
৪. বিকল্প নির্মাণ সামগ্রী:
ইটের পরিবর্তে পরিবেশবান্ধব উপকরণ ব্যবহারকে উৎসাহিত করতে হবে।
সাভারে অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ প্রশাসনের একটি সাহসী পদক্ষেপ। এটি পরিবেশ রক্ষার পাশাপাশি আইন মেনে চলার গুরুত্ব তুলে ধরেছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের বর্তমান পরিস্থিতিতে পরিবেশ রক্ষায় এখনই পদক্ষেপ নিতে হবে। প্রশাসনের এই উদ্যোগ প্রশংসনীয়, তবে আমাদের প্রত্যেককেই সচেতন হতে হবে।
পরিবেশ রক্ষায় সক্রিয় ভূমিকা নিন। পরিবেশবান্ধব উন্নয়নের জন্য সচেতন হোন এবং অন্যদেরও সচেতন করুন। এই লেখাটি শেয়ার করুন, যেন আরও মানুষ সচেতন হয়। একসঙ্গে কাজ করলেই সম্ভব হবে আমাদের পরিবেশ রক্ষা।