কুমিল্লা নগরের জাঙ্গালিয়া এলাকায় বাণিজ্য মেলায় চলমান একটি সার্কাস থেকে উদ্ধার করা হয়েছে একটি এশিয়ান কালো ভালুক এবং দুটি বানর। এই অভিযানটি আজ শনিবার, দুপুরের দিকে, ঢাকা থেকে আসা বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট এবং কুমিল্লা সামাজিক বন বিভাগের সহায়তায় পরিচালিত হয়। বন বিভাগ জানিয়েছে, উদ্ধার করা প্রাণীগুলোকে গাজীপুর সাফারি পার্কে অবমুক্ত করা হবে। সার্কাস থেকে বন্য প্রাণী উদ্ধার
অভিযান: পরিবেশ রক্ষা ও বন্য প্রাণী সংরক্ষণ
এশিয়ান কালো ভালুকটি বর্তমানে আইইউসিএন (International Union for Conservation of Nature) এর তালিকায় মহাবিপন্ন প্রজাতির হিসেবে অন্তর্ভুক্ত। দীর্ঘদিন ধরে সার্কাসের মাধ্যমে ওই ভালুকটিকে অমানবিকভাবে বন্দী করে খেলা দেখানো হচ্ছিল, যা পরিবেশ এবং প্রাণী দুনিয়ার জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর।
অবৈধ কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ
সার্কাস থেকে বন্য প্রাণী উদ্ধারের খবর প্রথমে ফেসবুক-এ ছড়িয়ে পড়ে, এবং পরে বন সংরক্ষক হোসেন মাহমুদ নিশাত বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার পর আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়। উদ্ধারকৃত বন্য প্রাণী দুটি, একটি কালো ভালুক এবং দুটি বানর, সার্কাস কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে মুচলেকা নিয়ে গাজীপুরের উদ্দেশ্যে রওনা দেওয়া হয়। সার্কাস থেকে বন্য প্রাণী উদ্ধার
কুমিল্লা সামাজিক বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. মাজহারুল ইসলাম জানান, “প্রকৃতির প্রতি আমাদের দায়িত্বে কোনো ছাড় নয়। আমাদের পক্ষ থেকে নিয়মিতভাবে বন্য প্রাণী উদ্ধার ও সংরক্ষণে অভিযান চলবে।”
অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড: পরিবেশের ক্ষতি
বিশেষজ্ঞরা জানান, এ ধরনের কর্মকাণ্ড শুধুমাত্র প্রাণীসমাজের জন্য বিপদজনক নয়, বরং এটি পরিবেশেরও মারাত্মক ক্ষতি করে। মোশারফ হোসেন, একজন দীর্ঘদিনের বন্য প্রাণী রক্ষাকারী, জানান, এই ধরনের অপরাধের ফলে বিপন্ন প্রাণীগুলো আরও কমে যাচ্ছে এবং তাদের অস্তিত্ব সংকটের মুখে পড়ছে।
মুচলেকা ও ভবিষ্যত পরিকল্পনা
ঢাকা থেকে আসা বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিদর্শক নার্গিস সুলতানা বলেন, “সার্কাস কর্তৃপক্ষ থেকে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে যে, তারা ভবিষ্যতে বন্য প্রাণী ব্যবহার করবে না। যদি এমন কোনো ঘটনা আবারও ঘটে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
নতুন জীবন: গাজীপুর সাফারি পার্কে অবমুক্ত
উদ্ধারকৃত বন্য প্রাণীগুলো গাজীপুর সাফারি পার্ক-এ নিরাপদে অবমুক্ত করা হবে, যেখানে তারা প্রকৃতির মধ্যে নিরাপদভাবে জীবনযাপন করতে পারবে। এ উদ্যোগের মাধ্যমে বন্য প্রাণী সংরক্ষণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখা হচ্ছে।
শেষ কথা
এই অভিযান শুধু কুমিল্লা নয়, বরং সারা দেশে বন্য প্রাণী রক্ষা এবং পরিবেশ সংরক্ষণের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। বন বিভাগ এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির প্রচেষ্টার মাধ্যমে, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা এবং বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী সংরক্ষণে আরও কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
Call-to-Action (CTA)
আপনার কী মতামত? জানিয়ে দিন নিচে মন্তব্যে। আমরা সবাই মিলে যদি একত্রিত হই, তবে পরিবেশ রক্ষায় আরও শক্তিশালী পদক্ষেপ নিতে পারব। 🌿
#কুমিল্লা #বন্যপ্রাণী_উদ্ধার #পরিবেশ_রক্ষা #এশিয়ান_কালো_ভালুক #বানর #গাজীপুর_সাফারি_পার্ক #সার্কাস_অভিযান #বন_বিভাগ