সিলেটের বিখ্যাত রাতারগুল জলাবনে এক ভয়াবহ পরিবেশ বিপর্যয়ের ঘটনা ঘটছে। সেখানে খালে বিষ দিয়ে মাছ শিকার ও পানি শুকিয়ে ফেলার কারণে বনভূমির জীববৈচিত্র্য মারাত্মকভাবে হুমকির সম্মুখীন হচ্ছে। এই অমানবিক কর্মকাণ্ড জলবায়ুর উপর প্রভাব ফেলছে এবং ধোঁয়া দূষণের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। কিন্তু কর্তৃপক্ষের নজরদারির অভাব প্রকৃতিকে ধ্বংসের দিকে ঠেলে দিচ্ছে। জীববৈচিত্র্যের উপর বিপর্যয়
রাতারগুলের বিপর্যয়: বনবিভাগের উদাসীনতা
গত সোমবার রাতে রাতারগুলের কৈয়ার খালে বিষ ঢেলে মাছ শিকারের ঘটনা ঘটেছে। এতে খালের মাছের বিশাল অংশ মারা গেছে। বন বিভাগের কর্মকর্তা মো. সালাহ উদ্দিনের কাছে অভিযোগ করা হলেও, তিনি তখন কর্মশালায় ব্যস্ত ছিলেন। বন ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্যরাও এ বিষয়ে উদাসীন থেকেছেন।
স্থানীয় সূত্র জানায়, বন বিভাগের কিছু কর্মকর্তা এবং সিএমসি কমিটির সদস্যদের যোগসাজশে অবৈধভাবে মাছ শিকার করা হচ্ছে। এর ফলে বনের প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং জলবায়ু ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে। বিষাক্ত রাসায়নিক ব্যবহারের কারণে শুধু মাছ নয়, বনের অন্যান্য জীববৈচিত্র্যও ধ্বংস হচ্ছে, যা সমগ্র এলাকার পরিবেশের উপর দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলবে।
জলবায়ু পরিবর্তনের তীব্র প্রভাব
রাতারগুল বনবিনাশের ফলে এই অঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তনও ত্বরান্বিত হচ্ছে। বনভূমির ধ্বংসের কারণে কার্বন শোষণ কমে যাচ্ছে এবং ধোঁয়া দূষণ বৃদ্ধি পাচ্ছে। বন কেটে ফেলা এবং খালে বিষ ব্যবহার স্থানীয় হাওর ও নদীগুলোর পানির মানও নষ্ট করছে, যা ভবিষ্যতে মানুষের জীবনমানের উপরও বিরূপ প্রভাব ফেলবে।
কেন এই ঘটনা উদ্বেগজনক?
- জীববৈচিত্র্যের ধ্বংস: বিভিন্ন প্রজাতির মাছসহ বনের অন্যান্য প্রাণী বিষের কারণে মারা যাচ্ছে।
- জলবায়ুর ভারসাম্যহীনতা: বন কেটে ফেলা এবং বিষের ব্যবহার এলাকার জলবায়ুর উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
- দায়িত্বশীলদের উদাসীনতা: বন বিভাগের পক্ষ থেকে কোনো কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
জীববৈচিত্র্য রক্ষায় এখনই পদক্ষেপ প্রয়োজন
পরিবেশবাদী সংগঠনগুলি প্রথম থেকেই এই ধ্বংসযজ্ঞের প্রতিবাদ করে আসছে। ধোঁয়া দূষণ ও জলবায়ু পরিবর্তনের হাত থেকে বাঁচাতে রাতারগুল বনকে সুরক্ষা দেওয়া জরুরি। বন বিভাগের কর্মকর্তারা যদি এ বিষয়ে সচেতন না হন, তাহলে ভবিষ্যতে বড় ধরনের পরিবেশগত বিপর্যয়ের মুখোমুখি হতে হবে। জীববৈচিত্র্যের উপর বিপর্যয়
পাঠকদের প্রতি আহ্বান
রাতারগুল বন এবং এর জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য সবাইকে সচেতন হতে হবে। আপনার মতামত জানাতে এবং বন রক্ষার আন্দোলনে অংশ নিতে মন্তব্য করুন। প্রকৃতি বাঁচানোর এই যুদ্ধে আপনার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।