জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে ফসল উৎপাদন বড় সংকটের মুখে বাংলাদেশ
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব বাংলাদেশে ফসল উৎপাদনকে ক্রমশ কঠিন করে তুলছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, উত্তরাঞ্চলে ধান, গম এবং শাকসবজির উৎপাদন ২০৫০ সালের মধ্যে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত কমে যেতে পারে। এই সংকট মোকাবেলায় এখনই পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। ফসলের উৎপাদন
রাতের তাপমাত্রা বৃদ্ধি: ফসল উৎপাদনে নতুন চ্যালেঞ্জ
গবেষণায় দেখা গেছে, ২১০০ সালের মধ্যে রাতের গড় তাপমাত্রা প্রায় ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বাড়তে পারে। বিশেষ করে ধান এবং গমের ক্ষেত্রে রাতের তাপমাত্রা বেশি হলে ফলন মারাত্মকভাবে কমে যায়। ধানের ফুল ফোটার সময় এবং গমের দানা গঠনের সময় তাপমাত্রা বাড়লে এগুলোর উৎপাদন উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যেতে পারে।
বৃষ্টিপাতের অনিয়ম এবং খরার প্রভাব
বাংলাদেশে গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত বাড়লেও শীতকালে বৃষ্টিপাত কমছে। এই প্রবণতা শুষ্ক মৌসুমে সেচনির্ভরতা বাড়াচ্ছে এবং খরার প্রকোপও বাড়ছে। এর ফলে দেশের উত্তরাঞ্চলে ধান, গম এবং অন্যান্য ফসল উৎপাদনে প্রভাব পড়ছে, যা খাদ্য নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলতে পারে।
সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধি এবং লবণাক্ততা
বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়ার কারণে লবণাক্ততা বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ফলে উপকূলীয় অঞ্চলে শস্য উৎপাদন কঠিন হয়ে উঠছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ২১০০ সালের মধ্যে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা ০.৮৬ মিটার পর্যন্ত বাড়তে পারে, যা মাটির উর্বরতা নষ্ট করে শস্য উৎপাদনে বাধা সৃষ্টি করবে।
কৃষিতে অভিযোজন ও স্থায়ীত্বের পথে করণীয়
এই সংকট মোকাবেলায় কৃষিতে অভিযোজন, শস্যের বৈচিত্র্যকরণ, এবং জলবায়ু সহনশীল ফসলের জাত উদ্ভাবন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বিশেষজ্ঞ মোহাম্মাদ কামরুজ্জামান মিলন মনে করেন, জৈব সার ও কম্পোস্ট ব্যবহারের মাধ্যমে মাটির স্বাস্থ্য উন্নত করা যেতে পারে। বর্ষাকালে পানি সংরক্ষণ করে তা শুষ্ক মৌসুমে ব্যবহার করা ফসল উৎপাদন অব্যাহত রাখতে সাহায্য করবে।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সচেতনতা প্রয়োজন
ভবিষ্যতে জলবায়ুর এই প্রভাবকে মোকাবেলায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। ফসলের জন্য সহনশীল জাত উদ্ভাবনে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে এবং কৃষকদের কাছে সঠিক আবহাওয়ার তথ্য পৌঁছানো গুরুত্বপূর্ণ, যাতে তারা সঠিক সময়ে ফসল রোপণ, সেচ এবং সংগ্রহ করতে পারে।
CTA: জলবায়ু পরিবর্তনের এই সংকট মোকাবেলায় আমাদের সবার দায়িত্ব রয়েছে। পরিবেশ রক্ষায় সচেতন থাকুন এবং এই পরিবর্তনের প্রভাব থেকে কৃষিকে সুরক্ষিত রাখতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করুন।