পরিবেশ রক্ষা এবং বায়ুদূষণ বন্ধে সরকারী অভিযান
দেশজুড়ে পরিবেশ রক্ষা এবং বায়ুদূষণ বন্ধের লক্ষ্যে গত রবিবার (১২ জানুয়ারি) পরিবেশ অধিদপ্তর এক বৃহৎ অভিযান পরিচালনা করেছে। এই অভিযানে ২ হাজার ৪২ কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ করা হয়েছে, পাশাপাশি বায়ুদূষণের দায়ে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। অভিযানের মধ্যে যানবাহন, নির্মাণসামগ্রী, ব্যাটারি কারখানা, এবং অন্যান্য শিল্প প্রতিষ্ঠানকে লক্ষ্য করা হয়। এই অভিযান চলবে বলে জানানো হয়েছে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় থেকে। ২ হাজার কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ
পলিথিন জব্দ এবং পলিথিন উৎপাদন কারখানা সিলগালা
অভিযানে পরিবেশ অধিদপ্তর কর্তৃক পরিচালিত চারটি মোবাইল কোর্টে নিষিদ্ধ পলিথিন উৎপাদন, বিক্রয় এবং বাজারজাত বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হয়। এর মাধ্যমে ২ হাজার ৪২ কেজি পলিথিন জব্দ করা হয়েছে। এছাড়া, একটি অবৈধ পলিথিন উৎপাদন কারখানাকে সিলগালা করা হয়েছে। এসব পলিথিনের ব্যবহার পরিবেশের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর এবং জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম কারণ হিসেবে পরিচিত।
বায়ুদূষণ এবং শব্দদূষণ রোধে অভিযান
অভিযানটি ছিল কেবল পলিথিনের বিরুদ্ধে নয়। ঢাকা মহানগরের উত্তরা, শেরেবাংলানগর, গাজীপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জসহ বিভিন্ন জায়গায় বায়ুদূষণের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়। নির্মাণসামগ্রী খোলা অবস্থায় রাখা এবং স্টিল ও রি-রোলিং মিল থেকে অতিরিক্ত দূষিত বায়ু নির্গমনের কারণে ৩টি মোবাইল কোর্ট পরিচালিত হয়। এতে ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা আদায় এবং বেশ কিছু প্রতিষ্ঠানকে সতর্ক করা হয়। ২ হাজার কেজি নিষিদ্ধ পলিথিন জব্দ
যানবাহন থেকে কালো ধোঁয়া: পরিবেশ অধিদপ্তরের অভিযান
ঢাকার মিরপুর-১ এলাকায় যানবাহন থেকে অতিরিক্ত কালো ধোঁয়া নির্গমন করার কারণে ৩টি পরিবহনকে জরিমানা করা হয়। মোট ৫ হাজার ৫০০ টাকা জরিমানা আদায় করা হয় এবং পরিবহন মালিকদের পরিবেশবান্ধব ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য সতর্ক করা হয়।
অবৈধ ব্যাটারি কারখানা বন্ধ
ঢাকায় অবৈধভাবে সিসা ও ব্যাটারি গলানোর একটি কারখানাও চিহ্নিত করা হয়। এই কারখানাটি থেকে দুই ট্রাক সিসা এবং ব্যাটারি গলানোর যন্ত্রপাতি জব্দ করা হয়েছে এবং কারখানাটি সিলগালা করা হয়েছে। পরিবেশ দূষণের অন্যতম কারণ হিসেবে ব্যাটারি গলানোর কাজকে চিহ্নিত করা হয়েছে, যা দূষিত বায়ু ছাড়ায় এবং স্বাস্থ্যগতভাবে মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে।
পরিবেশ সংরক্ষণে সরকারের কঠোর পদক্ষেপ
পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় জানায়, পরিবেশ রক্ষায় এ ধরনের অভিযান চলবে এবং এ ধরণের অবৈধ কার্যক্রম বন্ধ করা হবে। জনগণের সহযোগিতা ও সচেতনতার মাধ্যমে পরিবেশ রক্ষায় একযোগ কাজ করতে হবে।
সমাজে পরিবেশ সচেতনতা বাড়াতে সরকারের দৃঢ় অবস্থান
এ ধরনের অভিযানের লক্ষ্য শুধু আইন প্রয়োগ করা নয়, বরং পরিবেশ রক্ষার জন্য সামাজিক সচেতনতা তৈরি করাও। পরিবেশ অধিদপ্তর ও সরকারের অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলি যৌথভাবে কাজ করছে, যাতে পরিবেশের ক্ষতি রোধ করা যায় এবং বায়ুদূষণ কমানো যায়।
পরিবেশ রক্ষায় আমাদের দায়িত্ব
এই অভিযানের মাধ্যমে স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যে, আমাদের পরিবেশ রক্ষা করা আমাদের সকলের দায়িত্ব। সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের পাশাপাশি, আমাদের উচিত পরিবেশবান্ধব পণ্য ও পদ্ধতি ব্যবহার করা। পলিথিন ও অন্যান্য পরিবেশে ক্ষতিকর উপাদান পরিত্যাগ করা এবং প্রতিটি নাগরিকের সচেতনতা বৃদ্ধি করা জরুরি।
এ ধরনের পরিবেশ সংরক্ষণ ও বায়ুদূষণ রোধের উদ্যোগে আরও সক্রিয় হয়ে আমাদের জীবনধারাকে পরিবেশবান্ধব করতে হবে।