26.6 C
Bangladesh
রবিবার, জুন ২২, ২০২৫
spot_img

পান্থকুঞ্জ পার্কের শেষ প্রহর? পান্থকুঞ্জ বাঁচাতে শিল্পীদের অভিনব প্রতিবাদ

ঢাকার প্রাণকেন্দ্র কারওয়ান বাজারসংলগ্ন পান্থকুঞ্জ পার্ক একসময় ছিল শহুরে জীবনের সবুজ প্রশান্তির একটি স্থান। কিন্তু আজ এটি একটি নির্মাণসাইটে পরিণত হয়েছে। হাতিরঝিল থেকে পলাশী পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের সংযোগ সড়ক নির্মাণের নামে ধ্বংস করা হচ্ছে এই পার্ক। এমন পরিস্থিতিতে পরিবেশ সচেতন শিল্পীরা অভিনব ও সৃজনশীল উপায়ে এই ধ্বংসের প্রতিবাদ করছেন।

বাংলাদেশে জলবায়ু সংকট আর পরিবেশ ধ্বংসের যে ধারাবাহিকতা চলছে, তা শুধু প্রকৃতির জন্য নয়, শহরের মানুষের জীবনের জন্যও হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

অভিনয় ও শিল্পকর্মে প্রতিবাদের কণ্ঠ

আজ শনিবার পান্থকুঞ্জ পার্কে দিনব্যাপী এক অভিনব প্রতিবাদ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের উদ্যোগে এই প্রতিবাদে অংশ নেন বিভিন্ন শিল্পী।

পার্ক ঘিরে থাকা টিনের দেয়াল আর ছড়িয়ে থাকা কনটেইনারগুলোতে প্রতিবাদী স্লোগান লেখা হয়েছে, যেমন—’সেভ ট্রিজ অব ঢাকা’ এবং ‘দাবদাহের কথা মনে রাখার কী দরকার?’।

শিল্পীরা অভিনয়ের মাধ্যমে তুলে ধরেন পরিবেশ রক্ষার গুরুত্ব। মৃত গাছের পাতা ও পার্ক ধ্বংসের সরঞ্জাম দিয়ে পরিবেশ সচেতন বার্তা দেন তারা।

শিল্পী ওয়ালিদ সাদ্দাম তপু ‘গাছমানব’ সেজে অভিনব প্রতিবাদ করেন। তিনি বলেন, “গাছ কাটা নয়, এটি গাছ হত্যা। এই হত্যার বিচার চাই।”

৪৪ দিনের প্রতিবাদ: পরিবেশ রক্ষার দৃঢ় প্রত্যয়

বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলন দীর্ঘ ৪৪ দিন ধরে এই সড়ক নির্মাণ প্রকল্পের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছে। সংগঠনটির সমন্বয়ক নাঈম উল হাসান বলেন, “ঢাকা পৃথিবীর অন্যতম দূষিত শহর। এখানকার সামান্য কিছু পার্কও যদি ধ্বংস হয়, তবে আমাদের জীবন আরও ঝুঁকির মুখে পড়বে।”

এই আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত শিল্পীরা পরিবেশ রক্ষায় কেবল কথার নয়, বরং সৃজনশীল উপস্থাপনার মাধ্যমে জনসাধারণের মনোযোগ আকর্ষণ করতে সচেষ্ট।

শিল্পের সুর প্রকৃতির সঙ্গে

বাংলাদেশ গাছ রক্ষা আন্দোলনের আর্ট কিউরেটর আমিরুল রাজিব বলেন, “প্রকৃতির সান্নিধ্যে না থাকলে শিল্পকলার মাধ্যমে সৃজনশীলতা বেঁচে থাকতে পারে না। একটি সবুজ স্থান হারালে মানুষ সংবেদনশীলতা হারায়। হাতিরঝিল ও পান্থকুঞ্জ বাঁচলে শিল্পকলা আরও মুখরিত হবে।”

তিনি আরও উল্লেখ করেন, কেন বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও নীতিনির্ধারকরা পরিবেশ নিয়ে উদাসীন। নতুন বাংলাদেশে পরিবেশ ও প্রকৃতির অগ্রাধিকার থাকা উচিত।

কেন এই প্রতিবাদ জরুরি?

ঢাকা শহরে ক্রমবর্ধমান দূষণ, তাপমাত্রা বৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব দিন দিন প্রকট হচ্ছে। পান্থকুঞ্জ পার্কের মতো জায়গা ধ্বংস হওয়া মানে মানুষের জীবন থেকে আরো একটি শ্বাস নেওয়ার সুযোগ হারানো।

এই প্রতিবাদের মাধ্যমে শিল্পীরা কেবল একটি পার্ক রক্ষার জন্য নয়, বরং একটি বার্তা দিচ্ছেন যে, উন্নয়ন প্রকল্পের নামে পরিবেশ ধ্বংস মেনে নেওয়া যায় না।

সচেতনতার আহ্বান

পান্থকুঞ্জ পার্ক ধ্বংসের এই সড়ক নির্মাণ প্রকল্প নিয়ে আপনার মতামত কী? পরিবেশ রক্ষায় আমরা কীভাবে আরও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারি?

আপনার মতামত দিন এবং শেয়ার করে সচেতনতার বার্তা ছড়িয়ে দিন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
spot_img

সর্বশেষ সংবাদ