27.1 C
Bangladesh
বুধবার, সেপ্টেম্বর ২৪, ২০২৫
spot_img

ভৈরবে মেঘনার তাণ্ডব: তিন দিনে বিলীন ২০০ মিটার তীর

মেঘনার ভাঙনের বর্তমান চিত্র

কিশোরগঞ্জের ভৈরব বাজারের বাগানবাড়ি এলাকায় মেঘনার ভাঙন ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। মাত্র তিন দিনের ব্যবধানে প্রায় ২০০ মিটার নদীর তীর বিলীন হয়ে গেছে। ভাঙনের কবলে রয়েছে ভৈরবের গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যকেন্দ্র, দুটি রেলসেতু এবং একটি সড়কসেতু। ভৈরবে মেঘনার ভাঙনে

বুধবার সকালেই প্রায় ৫০ মিটার তীর ধসে পড়েছে। গত সোমবার রাতে শুরু হওয়া ভাঙন আজ পর্যন্ত থামেনি। স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, তবে এখনো পর্যন্ত ভাঙন রোধে কার্যকর কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়নি।

ভাঙনের কারণ: নির্মাণকাজ ও অযত্ন

এই ভাঙনের মূল কারণ হিসেবে স্থানীয়রা রেলডর্ক নির্মাণ ও নদীর পাড় কাটাকে দায়ী করছেন। অনুমতি ছাড়াই রেলডর্ক নির্মাণের জন্য নদীর তীর কাটার কাজ চলছিল। পানির প্রবাহ পরিবর্তন এবং মাটি কাটার কারণে নদীর পাড় দুর্বল হয়ে পড়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই ধরনের অযাচিত নির্মাণকাজ নদীভাঙনের জন্য বড় দায়ী।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) কর্মকর্তারাও স্বীকার করেছেন যে রেলডর্ক নির্মাণ ও ড্রেজিংয়ের কারণে শুকনো মৌসুমেও ভাঙনের শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তাছাড়া, গত বছরের সেপ্টেম্বরেও একই জায়গায় ভাঙন দেখা দিয়েছিল, কিন্তু তখনও ভাঙন রোধের স্থায়ী সমাধান করা হয়নি। ভৈরবে মেঘনার ভাঙনে

ভৈরবের অর্থনীতিতে মেঘনার প্রভাব

মেঘনা নদী ভৈরবের জন্য একদিকে আশীর্বাদ, অন্যদিকে আতঙ্ক। এই নদীকে ঘিরেই গড়ে উঠেছে ভৈরবের বাণিজ্যিক সমৃদ্ধি। তবে নদীর ভাঙন এখন এই অর্থনীতির জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে।

ব্যবসায়ীদের মতে, ভাঙনের কারণে যদি রেলসেতু বা সড়কসেতুর মতো অবকাঠামো ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তবে পুরো এলাকার বাণিজ্য কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়বে। ইতিমধ্যে লঞ্চঘাটসহ বাণিজ্যকেন্দ্রগুলোও ঝুঁকিতে রয়েছে।

পরিবেশের ভারসাম্য নষ্টের শঙ্কা

নদীভাঙন শুধুমাত্র অর্থনৈতিক সমস্যা নয়, এটি পরিবেশের জন্যও বড় সংকট। মেঘনার তীরবর্তী এলাকার মাটি ক্ষয়ে গিয়ে নদীর গভীরতা কমে যায়। ফলে পানির প্রবাহ বাধাগ্রস্ত হয় এবং পার্শ্ববর্তী এলাকার বাস্তুসংস্থান নষ্ট হয়।

জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবও এই সমস্যাকে ত্বরান্বিত করছে। তাপমাত্রা বৃদ্ধির কারণে নদীর পানি ও পাড়ের মাটি দুর্বল হয়ে পড়ছে। নদীভাঙনের মতো সমস্যাগুলো মোকাবিলা করতে হলে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা গ্রহণ করা জরুরি। ভৈরবে মেঘনার ভাঙনে

করণীয়: স্থায়ী সমাধানের দাবি

স্থানীয় ব্যবসায়ী ও বাসিন্দারা শহর রক্ষা বাঁধ নির্মাণের দাবি জানাচ্ছেন। তাদের মতে, জিও ব্যাগ ফেলে সাময়িক সমাধানের বদলে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করতে হবে।

এছাড়া, পরিবেশ রক্ষায় নির্মাণকাজের জন্য সঠিক অনুমতি নেওয়া এবং দায়িত্বশীল কার্যক্রম পরিচালনা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ইউএনও শবনম শারমিন জানিয়েছেন, অননুমোদিত কার্যক্রমের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

শেষ কথা: আমাদের করণীয়

মেঘনার ভাঙন শুধু ভৈরবের নয়, পুরো বাংলাদেশের একটি সমস্যা। অর্থনীতি, পরিবেশ এবং মানুষের জীবনযাত্রা রক্ষায় আমাদের সবাইকে সচেতন হতে হবে।

আপনার মতামত জানান—কীভাবে মেঘনার ভাঙন রোধে কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে? মন্তব্য করুন এবং এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে পোস্টটি শেয়ার করুন।

#মেঘনারভাঙন #পরিবেশ #জলবায়ুপরিবর্তন #বাংলাদেশ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
spot_img

সর্বশেষ সংবাদ