ব্রাহ্মণবাড়িয়া, ২৯ জানুয়ারি – ব্রাহ্মণবাড়িয়ার বাঞ্ছারামপুর উপজেলার সোনারামপুর ইউনিয়নের কানাইনগর এলাকায় অবৈধ বালু উত্তোলনের অভিযোগে ৪ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মঙ্গলবার (২৯ জানুয়ারি) উপজেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে, এবং প্রত্যেককে ১৫ দিনের কারাদণ্ড প্রদান করা হয়। এসময় ২ কোটি টাকা মূল্যের ৪টি ড্রেজার মেশিনও জব্দ করা হয়। অবৈধ বালু উত্তোলনকারী
অভিযান ও গ্রেপ্তার
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফেরদৌস আরা, যিনি এই অভিযানে নেতৃত্ব দেন, বলেন, “আমরা অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছি। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন নরসিংদীর শাহিন মিয়া (৩২), মাধবদীর আব্দুল্লাহ (২৪), মেহেন্দীগঞ্জের সোহাগ মিয়া (২০) এবং কানাইনগরের নীরব মিয়া (১৯)। তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং আগামীতে এমন কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।” অবৈধ বালু উত্তোলনকারী
বালু উত্তোলনের ক্ষতিকর প্রভাব
কানাইনগরের স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, গত কয়েক বছর ধরে মেঘনা নদী থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। এই কার্যক্রমের কারণে স্থানীয় ফসলি জমি ও বাড়িঘর নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে। প্রতিবাদ সত্ত্বেও, ওই এলাকায় প্রভাবশালী একটি সিন্ডিকেট দীর্ঘদিন ধরে এই অবৈধ কাজ চালিয়ে যাচ্ছিল।
অবৈধ বালু উত্তোলন ও জলবায়ু পরিবর্তন
অবৈধ বালু উত্তোলন শুধু পরিবেশগত ক্ষতির কারণ নয়, বরং এটি জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবেও অবদান রাখছে। যখন নদী থেকে অতিরিক্ত বালু উত্তোলন করা হয়, তখন নদীভাঙন বৃদ্ধি পায়, এবং ভূমির ক্ষয়-ক্ষতি হয়। এর ফলে এলাকাগুলোর স্থায়ী বাসস্থান, কৃষি জমি এবং জলাশয়ের ভারসাম্য বিনষ্ট হয়, যা পরিবেশের জন্য মারাত্মক বিপদ ডেকে আনে। অবৈধ বালু উত্তোলনকারী
স্থানীয় প্রতিবাদ ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা
স্থানীয়রা জানিয়েছেন যে, দীর্ঘদিন ধরে তারা বালু উত্তোলনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানালেও, কোনো কার্যকরী ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। তবে, এই অভিযানের মাধ্যমে প্রশাসন সচেতনতা সৃষ্টি করেছে এবং আইন প্রয়োগে আরও তৎপর হয়েছে। ইউএনও ফেরদৌস আরা জানিয়েছেন, আগামী দিনে এই ধরনের অবৈধ কর্মকাণ্ডকে রোধ করতে আরও কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।
পরিবেশ সচেতনতা ও ভবিষ্যত পদক্ষেপ
এটি স্পষ্ট যে অবৈধ বালু উত্তোলন শুধু পরিবেশের ক্ষতি নয়, বরং দেশের অর্থনীতিতেও বিরাট প্রভাব ফেলতে পারে। সরকারের উচিত আরও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করা এবং জনগণকে এই ধরনের অপরাধ সম্পর্কে সচেতন করা। স্থানীয় বাসিন্দাদের সহযোগিতা ছাড়া এই ধরনের অপরাধ প্রতিরোধ সম্ভব নয়।
শেষ কথা: এখনই সময়, পরিবেশ ও দেশের ভবিষ্যতের জন্য অবৈধ বালু উত্তোলন বন্ধ করার। একমাত্র সঠিক উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে আমরা পরিবেশের ক্ষতি রোধ করতে পারি এবং আগামী প্রজন্মের জন্য একটি নিরাপদ পৃথিবী রেখে যেতে পারি।