25.2 C
Bangladesh
বুধবার, সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৫
spot_img

মেলার উচ্চ শব্দে বিপর্যস্ত শহর: বাসিন্দাদের অশান্তি এবং পরিবেশগত বিপদ

বর্তমান সমাজে ক্রমাগত বাড়তে থাকা জনসংখ্যা, বাণিজ্যিক কার্যক্রম এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানগুলির কারণে পরিবেশের উপর একাধিক প্রভাব পড়ছে। বিশেষ করে উচ্চ শব্দের কারণে মানুষের জীবনযাত্রা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। এক মাস ধরে চলমান বাণিজ্য মেলার উচ্চ শব্দের কারণেও এলাকায় বাস করা মানুষের জীবন দুর্বিষহ হয়ে উঠেছে। এটি শুধুমাত্র পরিবেশগত সমস্যা নয়, বরং মানুষের দৈনন্দিন জীবনের এক অনিশ্চিত পরিস্থিতি তৈরি করেছে। শব্দ দূষণ

মাইকের উচ্চ শব্দের প্রভাব

মাইকের উচ্চ শব্দের ক্ষতিকর প্রভাবের প্রতি সচেতনতা অনেকদিন ধরেই তৈরি হলেও, তার সমাধানে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। বিশেষ করে যেখানে জনবহুল এলাকা ও আবাসিক স্থান রয়েছে, সেখানে মাইকের শব্দ মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে। ঘুমের ঘাটতি, মানসিক চাপ, উচ্চ রক্তচাপ এবং পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ার মতো সমস্যা সৃষ্টি হয়। শব্দ দূষণ

এমনকি শিশুদের জন্য পড়াশোনা এবং বৃদ্ধদের জন্য বিশ্রাম নেওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। বিশেষত যাদের শারীরিক সমস্যাগুলি রয়েছে, তাদের জন্য শব্দ দূষণ আরও বেশি বিপজ্জনক। বর্তমানে, এমন উচ্চ শব্দের কারণে ঘরের মধ্যে এবং বাইরে যাতায়াত করা কঠিন হয়ে পড়েছে। শব্দ দূষণ

মেলা ও উচ্চ শব্দের সম্পর্ক

এই মেলা পরিচালনার জন্য কিছু বিধিনিষেধ থাকা সত্ত্বেও, মেলার আয়োজকরা উচ্চ শব্দের ব্যবহার থামাতে রাজি হচ্ছেন না। একে বলা হচ্ছে “মেলাতে উৎসাহ সৃষ্টি করতে মাইকের প্রয়োজন।” কিন্তু সারা শহর জুড়ে মাইকের ব্যবহার ও বাজনা মানুষের জন্য এক ধরনের নিরব শোষণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই সমস্যার প্রকৃতি শুধুমাত্র একটি বাণিজ্যিক ইভেন্টের বাধা নয়, বরং একটি পরিবেশগত ও সামাজিক বিপর্যয়ের শুরু।

পরিবেশগত সমস্যা ও জলবায়ু পরিবর্তন

মাইক ও উচ্চ শব্দ শুধু মানুষের শারীরিক স্বাস্থ্যকেই প্রভাবিত করে না, এটি পরিবেশেরও ক্ষতি সাধন করে। শব্দ দূষণ বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রেক্ষাপটে আরও একটি গুরুতর সমস্যা হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে। ধ্বনিতরঙ্গের কারণে জীবজন্তু ও অন্যান্য পরিবেশগত ব্যহ্যতিক্রম সৃষ্টি হয়, যা বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্যকে নষ্ট করে।

বিশ্বজুড়ে পরিবেশ সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য আমরা নানা আন্দোলন দেখে থাকি, তবে স্থানীয় পরিবেশের প্রতি ততটা গুরুত্ব দেওয়ার প্রয়োজনীয়তা রয়েই গেছে। উচ্চ শব্দের এই দুর্বিষহ পরিস্থিতি জলবায়ু পরিবর্তনের অন্যতম সংকেত হতে পারে।

সমাধান কি?

প্রথমত, সরকারি পদক্ষেপের মাধ্যমে শব্দ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা একান্ত জরুরি। উচ্চ শব্দের শৃঙ্খলা বিধি মেনে চলা এবং নির্দিষ্ট এলাকায় মাইকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করার মাধ্যমে এই সমস্যা সমাধান সম্ভব।

দ্বিতীয়ত, জনসাধারণকে সচেতন করা প্রয়োজন। মানুষ যখন নিজেদের অধিকার সম্পর্কে জানবে, তখন তারা আরও বেশি সক্রিয় হয়ে উঠবে। স্থানীয় সরকার, পরিবেশবাদী সংগঠন ও সাধারণ মানুষ একত্রে কাজ করলে এই ধরনের সমস্যা দূর করা সম্ভব।

অবশ্যই, দায়িত্বশীল কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করা জরুরি। প্রশাসনের উচিত জনগণের সমস্যার প্রতি গুরুত্ব দেওয়া এবং দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা। পাশাপাশি, আয়োজনকারীদের উচিত তাদের অনুষ্ঠানের জন্য এমন স্থান নির্বাচন করা, যেখানে পরিবেশগতভাবে কোনও ক্ষতি হবে না।

শেষ কথা

বিশ্বজুড়ে পরিবেশ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং মানুষের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা বেড়ে চলেছে। আমাদের সচেতন হতে হবে এবং শব্দ দূষণের মতো সমস্যাগুলোর প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে। এটি শুধুমাত্র সুনামগঞ্জের মানুষের সমস্যা নয়, বরং পৃথিবীজুড়ে একটি বড় সমস্যা হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে। তাই, আসুন আমরা সবাই এই বিষয়ে সচেতন হয়ে, পরিবেশ রক্ষা এবং মানুষের জীবনমান উন্নতির জন্য কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করি।

আপনি কী মনে করেন? মাইকের উচ্চ শব্দের সমস্যা সমাধানে আপনার কী মতামত আছে? মন্তব্যে জানান।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
spot_img

সর্বশেষ সংবাদ