28.9 C
Bangladesh
বৃহস্পতিবার, জুলাই ১০, ২০২৫
spot_img

মেলার মাঠে শব্দ দূষণ বন্ধ, সুনামগঞ্জে পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ

উচ্চ শব্দ দূষণ: পরিবেশ ও জনস্বাস্থ্যকে হুমকি

বর্তমান যুগে পরিবেশ দূষণ আমাদের জীবনে বিরাট সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে। পরিবেশের সবদিক যেমন বায়ু, পানি, মাটি, জীববৈচিত্র্য, সব কিছুতেই হুমকি রয়েছে। এর মধ্যে একটি বড় সমস্যা হলো শব্দ দূষণ। বিশেষত, আমাদের শহর এলাকায় যেখানে মানুষের জীবিকা, শিক্ষা এবং ধর্মীয় কার্যক্রম চলে, সেখানে শব্দ দূষণ কার্যত একটি অনির্দিষ্ট ঝুঁকি হয়ে উঠছে। উচ্চ শব্দে মাইক বাজানো বন্ধ

সম্প্রতি সুনামগঞ্জ পৌর শহরের ষোলঘর এলাকায় বাণিজ্য মেলায় উচ্চ শব্দে মাইক বাজানোর বিষয়টি ছিল এক বিরাট সমস্যা। যদিও মেলা আয়োজনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল, তবে মাইক থেকে নির্গত উচ্চ শব্দ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জনস্বাস্থ্যের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল। অনেকেই অভিযোগ করেছেন, এর কারণে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় ব্যাঘাত ঘটছে, পাশাপাশি অসুস্থ মানুষের উপরও এর বিরূপ প্রভাব পড়ছে।

প্রশাসনিক পদক্ষেপ: দ্রুত প্রতিকার

এলাকাবাসীর প্রতিবাদে সাড়া দিয়ে সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সমর কুমার পাল নির্দেশ দেন, মেলার আয়োজকদের মাইক বন্ধ করতে। এর ফলে স্থানীয় জনগণের মধ্যে শান্তি ফিরে এসেছে এবং শব্দ দূষণের মাত্রা কমেছে। উচ্চ শব্দে মাইক বাজানো বন্ধ

প্রশাসন কর্তৃক নেওয়া এই পদক্ষেপটি পরিবেশ সংরক্ষণে একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। এটা স্পষ্ট করে দেয়, জনস্বার্থ ও পরিবেশ রক্ষার জন্য প্রশাসনের দ্রুত প্রতিক্রিয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ।

শব্দ দূষণের প্রভাব

শব্দ দূষণের প্রভাব মানবস্বাস্থ্যেও খুবই ক্ষতিকর। উচ্চ শব্দ মানুষের স্নায়ুপ্রণালী, শোনার ক্ষমতা এবং মানসিক অবস্থার উপর দীর্ঘমেয়াদী নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। বিশেষ করে শিশুরা, বৃদ্ধরা এবং অসুস্থ ব্যক্তিরা এর প্রভাব বেশি অনুভব করেন। শব্দ দূষণ শুধু আমাদের জীবনে অস্বস্তি আনছে না, এটি পরিবেশগত ভারসাম্যও নষ্ট করছে।

এমনকি এই ধরনের শব্দ দূষণ প্রাকৃতিক জীববৈচিত্র্যের ওপরও প্রভাব ফেলে। অনেক প্রাণী উচ্চ শব্দে ভয় পায়, ফলে তাদের স্বাভাবিক জীবনযাত্রা ব্যাহত হয়।

জনগণের প্রতিক্রিয়া ও ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা

এলাকার জনগণ জানিয়েছেন যে, তারা মেলার জন্য মাঠ বরাদ্দ দেওয়ার বিরুদ্ধে। এমনকি তারা দাবি করছেন, মেলা আয়োজকরা আরও দায়িত্বশীল হয়ে মাইকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আনুক, যেন এলাকাবাসীর জীবনযাত্রা কোনোভাবেই বিঘ্নিত না হয়।

এছাড়া, এটা প্রমাণ করে যে, শব্দ দূষণের বিরুদ্ধে প্রশাসনিক পদক্ষেপ প্রয়োজন। ভবিষ্যতে এমন ঘটনা এড়াতে একাধিক পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে, যেমন— শব্দ সীমা নির্ধারণ, নির্দিষ্ট সময়সীমা প্রবর্তন এবং জনগণের অংশগ্রহণে সচেতনতা তৈরি করা।

শেষ কথা

পরিবেশ রক্ষায় আমাদের সবার ভূমিকা থাকতে হবে। এটি শুধু প্রশাসনের বিষয় নয়, জনগণের সচেতনতা, দায়িত্ববোধ এবং আন্তরিকতা প্রয়োজন। প্রশাসন যেমন সঠিক সময় সঠিক পদক্ষেপ নিয়েছে, তেমনি আমাদেরও শব্দ দূষণ রোধে সক্রিয় হতে হবে।

আপনার শহরে বা এলাকায় কি আপনি কখনও শব্দ দূষণের কারণে সমস্যায় পড়েছেন? আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন এবং সচেতনতার দিকে একযোগে পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য সক্রিয় হোন।

#পরিবেশ #শব্দদূষণ #মেলারমাঠ #প্রশাসনিকপদক্ষেপ #জীববৈচিত্র্য #পরিবেশসংরক্ষণ #সুনামগঞ্জ #সচেতনতা #জলবায়ু

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here

আরও পড়ুন

Stay Connected

0FansLike
0FollowersFollow
0SubscribersSubscribe
spot_img

সর্বশেষ সংবাদ