বাংলাদেশের বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে নতুন এক পদক্ষেপের অংশ হিসেবে, শরীয়তপুর জেলার নড়িয়া উপজেলার কলুকাঠি এলাকার ‘মডার্ন ফ্যান্টাসি কিংডম‘ নামক শিশু পার্ক থেকে উদ্ধার করা হয়েছে বেশ কিছু বিপন্ন প্রজাতির প্রাণী। এই প্রাণীগুলোকে অবৈধভাবে একটি মিনি চিড়িয়াখানায় রাখা হয়েছিল, কিন্তু বর্তমানে সেগুলো গাজীপুরের শ্রীপুরের সাফারি পার্কে নিয়ে আসা হয়েছে। এই পদক্ষেপ বন্যপ্রাণী সংরক্ষণের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ সাফল্য হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। প্রাণী সুরক্ষার উদ্যোগ
অবৈধ চিড়িয়াখানার অনুসন্ধান
বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের কর্মকর্তারা গত সোমবার বিকেলে ‘মডার্ন ফ্যান্টাসি কিংডম’ নামক অবৈধ স্থাপনা থেকে আটটি শজারু, দুটি অজগর, একটি কুমির এবং একটি ভালুক উদ্ধার করেন। এগুলো নানাভাবে অবৈধভাবে আটক করা হয়েছিল এবং পার্ক কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে এই কার্যক্রমের আইনগত পরিণতির কথা অস্বীকার করা হয়নি।
প্রাণী উদ্ধারের প্রক্রিয়া
বন্য প্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের বিশেষ অভিযান চালিয়ে উদ্ধার করা হয় এই প্রাণীগুলো। অভিযানটি পরিচালনা করেন ইউনিটের পরিচালক ছানাউল্যা পাটওয়ারী এবং তার নেতৃত্বে ছিলেন বন্য প্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা রথীন্দ্র কুমার বিশ্বাস। উদ্ধারকৃত প্রাণীগুলো গাজীপুর সাফারি পার্কে পাঠানো হয়, যেখানে তাদের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে। এই প্রক্রিয়া প্রাণীদের নিরাপত্তা ও সুস্থতার জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
গাজীপুর সাফারি পার্কে তাদের অবস্থান
গাজীপুর সাফারি পার্কের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন, উদ্ধারকৃত প্রাণীগুলো সাফারি পার্কের কোয়ারেন্টিনে রাখা হয়েছে এবং তাদের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হচ্ছে। পরবর্তী সময়ে, প্রাণীগুলোকে পরিবেশের জন্য উপযুক্তভাবে পুনর্বাসন করা হবে। এই সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা নিশ্চিত করে, বন্য প্রাণী সংরক্ষণের জন্য সরকারের দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা আরও শক্তিশালী হতে চলেছে। প্রাণী সুরক্ষার উদ্যোগ
আইনি প্রেক্ষাপট
এই ঘটনায় বন্য প্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন ২০১২-এর আওতায় একটি গুরুত্বপূর্ণ আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। আইন অনুযায়ী, বন্য প্রাণী দখলে রাখা, শিকার করা এবং তাদের বিক্রয় করা অপরাধ হিসেবে গণ্য হয়। তবে, মডার্ন ফ্যান্টাসি কিংডম কর্তৃপক্ষ নিজেদের অজ্ঞতা স্বীকার করেছে এবং জানায় যে, তারা এই আইনটি যথাযথভাবে জানতেন না।
পরবর্তী পদক্ষেপ
এখন, উদ্ধৃত প্রাণীগুলো প্রকৃতির সাথে মিল রেখে পুনর্বাসনের জন্য পরিকল্পনা গ্রহণ করা হচ্ছে। সাফারি পার্কের কর্মকর্তারা আশাবাদী যে, এই ধরনের উদ্ধার অভিযান ভবিষ্যতে আরও ব্যাপক আকারে সফল হবে এবং বাংলাদেশে বন্য প্রাণী সংরক্ষণে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখবে।
শেষ কথা
এই অভিযান বাংলাদেশের বন্য প্রাণী সংরক্ষণে এক গুরুত্বপূর্ণ ধাপ। বন্য প্রাণীদের সুরক্ষা ও সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করার মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখা সম্ভব হবে। সরকার ও পরিবেশবাদী সংগঠনগুলোর সহযোগিতায় আরও বেশি প্রাণী উদ্ধারের কার্যক্রম পরিচালনা করতে হবে, যাতে জীববৈচিত্র্য বজায় থাকে এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের সুরক্ষা নিশ্চিত হয়।
Call to Action আপনি কি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণে আরও বেশি উদ্যোগ দেখতে চান? কমেন্টে আপনার মতামত জানাতে ভুলবেন না এবং এই বিষয়ে সচেতনতা ছড়িয়ে দিতে আমাদের পোস্টটি শেয়ার করুন!