নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলায় অবৈধ বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে স্থানীয়দের মানববন্ধনে হামলার ঘটনা ঘটেছে। মঙ্গলবার সন্ধ্যায়, চেয়ারম্যান ঘাট বাজারে এ ঘটনা ঘটে। হামলায় অন্তত তিনজন আহত হয়েছেন, যাদের মধ্যে হরণী ইউনিয়নের বাসিন্দা কামরুল ইসলাম, মো. জাফর ও মো. হাশেম উল্লেখযোগ্য। এই হামলা সৃষ্টির সাথে যুক্ত থাকা অভিযুক্তদের দাবি, তারা বালু ব্যবসায়ীরা, যারা রাজনৈতিক নেতা এবং প্রভাবশালীদের আশীর্বাদপুষ্ট। হাতিয়ায় অবৈধ বালু ব্যবসায়ী
অবৈধ বালু ব্যবসার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ
স্থানীয়রা দাবি করছেন যে, মেঘনা নদী ও আশেপাশের খালগুলো থেকে অবৈধভাবে বালু উত্তোলন হচ্ছে, যা তাদের জীবিকা এবং পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি। নদী ভাঙনজনিত সমস্যার পাশাপাশি, তারা জানান যে, বালু উত্তোলনের কারণে তাদের মাছ ধরা কঠিন হয়ে পড়েছে এবং নদীর পাড়ের মাটি বিক্রি হওয়ায় এলাকার স্বাভাবিক জীবনযাত্রা বিঘ্নিত হচ্ছে।
এ বিষয়ে প্রতিবাদ জানিয়ে কয়েকজন ক্ষতিগ্রস্ত স্থানীয়রা মানববন্ধন করে, যা নিয়ে উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। ঘটনার সময় হামলায় তিনজন আহত হলেও, পরিস্থিতি কিছুটা স্বাভাবিক হয় ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আক্তারুজ্জামান দোলনের হস্তক্ষেপে। হাতিয়ায় অবৈধ বালু ব্যবসায়ী
বালু ব্যবসার কারণে পরিবেশগত বিপর্যয়
এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন যে, বালু উত্তোলনকারী ব্যবসায়ীরা নদী পাড়ের মাটি কাটছে এবং এতে নদী ভাঙন আরও তীব্র হচ্ছে। “আমরা প্রতিবাদ করলে হামলার শিকার হচ্ছি,”- এমন মন্তব্য করেছেন এক স্থানীয় মৎস্যজীবী। তিনি জানান, বালু উত্তোলনের কারণে তার মাছ ধরার জাল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এবং জীবিকা চ্যালেঞ্জের মধ্যে পড়েছে।
সরকারি পদক্ষেপ এবং আইনগত ব্যবস্থা
হাতিয়া উপজেলা প্রশাসন অবৈধ বালু ব্যবসার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের উদ্যোগ নিয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কাজী শামীম জানিয়েছেন, তারা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বালু ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে জরিমানা করেছেন এবং এই অভিযান অব্যাহত থাকবে।
এদিকে, স্থানীয় ব্যবসায়ী ও অন্যান্য সচেতন নাগরিকরা অবিলম্বে এই অবৈধ কার্যক্রম বন্ধের দাবি জানিয়ে চলেছেন। তারা সরকারের দ্রুত পদক্ষেপে পরিবেশ রক্ষার তাগিদ দিয়েছেন, যাতে করে স্থানীয় জনগণ তাদের জীবনযাত্রা এবং জীবিকার স্বাভাবিক ধারায় ফিরিয়ে আনতে পারে।
শেষ কথা
হাতিয়ায় অবৈধ বালু ব্যবসা পরিবেশগত বিপর্যয়ের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যা শুধু প্রাকৃতিক পরিবেশের জন্য ক্ষতিকর নয়, স্থানীয় জনগণের জীবিকা ও সমাজ ব্যবস্থাকেও প্রভাবিত করছে। এই অবৈধ বাণিজ্যের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হলেও, পরিস্থিতি এখনো তেমন পরিবর্তন হয়নি। সরকার এবং স্থানীয় প্রশাসনের উচিত দ্রুত কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা, যাতে অবৈধ বালু ব্যবসা বন্ধ হয়ে পরিবেশ এবং মানুষের জন্য ক্ষতিকর পরিণতি রোধ করা সম্ভব হয়।
এ বিষয়ে আপনার মতামত কী? আপনার আশেপাশে কী ধরনের পরিবেশগত সমস্যা লক্ষ্য করেছেন? মন্তব্যে জানিয়ে দিন।
CTA: এ বিষয়ে আরও তথ্য পেতে আমাদের পেইজে সাবস্ক্রাইব করুন এবং আপনার মতামত আমাদের সঙ্গে শেয়ার করুন!