ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে দেশের উত্তর, উত্তর-পূর্বাঞ্চল এবং পূর্বাঞ্চলের ছয়টি নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র। এই পরিস্থিতিতে বন্যা পরিস্থিতির অবনতি এবং পরিবেশের উপর এর প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হয়েছে। ৬ নদীর পানি বাড়ছে
কেন্দ্রের নির্বাহী প্রকৌশলী সরদার উদয় রায়হান জানান, আগামী ৩০ ও ৩১ মে তারিখে ওই অঞ্চলগুলোতে ভারী বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এর ফলে ফেনীর মুহুরি, সিলেটের সারিগোয়াইন, সুনামগঞ্জের যাদুকাটা, উত্তরাঞ্চলের তিস্তা, হবিগঞ্জের খোয়াই এবং নেত্রকোনার সোমেশ্বরী নদীর পানি বিপৎসীমা অতিক্রম করতে পারে।
তিনি আরও জানান, ইতোমধ্যে এই নদীগুলোর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে গেছে। আগামী কয়েকদিনে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। ৬ নদীর পানি বাড়ছে
কেন বাড়ছে বন্যার ঝুঁকি?
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে বাংলাদেশে অতিবৃষ্টি এবং অনাবৃষ্টির মতো ঘটনা বাড়ছে। একদিকে যেমন অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে বন্যা দেখা দিচ্ছে, অন্যদিকে অপরিকল্পিত নগরায়ণ এবং নদীগুলোর নাব্যতা কমে যাওয়ায় পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে।
- জলবায়ু পরিবর্তন: বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধির কারণে বৃষ্টিপাতের ধরনে পরিবর্তন এসেছে। অল্প সময়ে অধিক বৃষ্টিপাতের কারণে নদ-নদীতে দ্রুত পানি বাড়ছে এবং বন্যা দেখা দিচ্ছে।
- অপরিকল্পিত নগরায়ণ: শহরের আশেপাশে জলাভূমি ভরাট করে বাড়িঘর নির্মাণের কারণে পানি নিষ্কাশনের পথ বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে।
- নদীর নাব্যতা হ্রাস: পলি জমার কারণে নদীগুলোর গভীরতা কমে গেছে। ফলে নদীর পানি ধারণ ক্ষমতা কমে যাওয়ায় বন্যা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে।
বন্যার প্রভাব:
বন্যা শুধু জীবন এবং সম্পত্তির ক্ষতি করে না, এটি পরিবেশের উপরও মারাত্মক প্রভাব ফেলে।
- কৃষি জমির ক্ষতি: বন্যার পানিতে তলিয়ে গিয়ে ফসল নষ্ট হয়ে যায়, যা খাদ্য নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলে।
- মাটির উর্বরতা হ্রাস: বন্যার কারণে মাটির উপরের উর্বর স্তর ধুয়ে যায়, যা দীর্ঘমেয়াদে কৃষিকাজের জন্য ক্ষতিকর।
- রোগের বিস্তার: বন্যার পানিতে বিভিন্ন ধরনের রোগজীবাণু ছড়িয়ে পড়ে, যা পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়ায়।
- জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি: বন্যার কারণে অনেক বন্যপ্রাণী তাদের আবাসস্থল হারায় এবং বাস্তুতন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট হয়।
করণীয়:
বন্যা পরিস্থিতি মোকাবিলা এবং পরিবেশ রক্ষায় আমাদের কিছু পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি।
- সতর্কতা: বন্যা পূর্বাভাস পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিরাপদ আশ্রয়ে সরে যেতে হবে।
- নদীর নাব্যতা বৃদ্ধি: নদী খননের মাধ্যমে নদীর গভীরতা বাড়াতে হবে, যাতে নদী বেশি পানি ধারণ করতে পারে।
- জলাধার সংরক্ষণ: শহরের আশেপাশে জলাধার সংরক্ষণ করতে হবে, যাতে অতিরিক্ত পানি জমা হতে পারে।
- গাছ লাগানো: বেশি করে গাছ লাগানোর মাধ্যমে পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে।
আপনার মতামত জানান
বন্যা পরিস্থিতি এবং পরিবেশ সুরক্ষার বিষয়ে আপনার মতামত কী? আপনি কী ধরনের পদক্ষেপ নিতে চান? নিচে মন্তব্য করে আমাদের জানান। আপনার প্রতিটি মতামত আমাদের ভবিষ্যৎ কর্মপন্থা নির্ধারণে সাহায্য করবে। পরিবেশ সুরক্ষায় আপনার সহযোগিতা একান্ত কাম্য। ৬ নদীর পানি বাড়ছে
আরও জানতে ভিজিট করুন
যদি আপনি পরিবেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে আরও জানতে চান, তাহলে আমাদের ওয়েবসাইট ভিজিট করুন এবং আমাদের নিউজলেটারে সাবস্ক্রাইব করুন। একসাথে কাজ করার মাধ্যমেই আমরা একটি সুন্দর ভবিষ্যৎ গড়তে পারি।