দেশে গত ২৪ ঘণ্টায় করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে আরও পাঁচজনের মৃত্যু হয়েছে। এই নিয়ে চলতি বছরে মৃতের সংখ্যা দাঁড়াল ১৬ জনে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সাম্প্রতিক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই তথ্য জানানো হয়েছে। একই সময়ে নতুন করে ৩৬ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছেন, যা মোট রোগীর সংখ্যাকে ২০ লাখ ৫১ হাজার ৯৭৮-এ উন্নীত করেছে। নতুন পাঁচজনের মৃত্যুতে দেশে মোট মৃতের সংখ্যা ২৯ হাজার ৫১৫ জনে পৌঁছেছে। করোনার নতুন ঢেউ
এই পরিসংখ্যান আমাদের আবারও মনে করিয়ে দেয় যে কোভিড-১৯ এখনও বিদায় নেয়নি। তবে আজকের আলোচনা শুধু এই স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য পর্যন্তই সীমাবদ্ধ নয়। আমরা বরং এই পরিস্থিতির একটি বৃহত্তর প্রেক্ষাপট নিয়ে কথা বলব – আমাদের পরিবেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তন। ভাবছেন, একটি স্বাস্থ্য বিষয়ক সংবাদ কীভাবে পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন-এর সাথে সম্পর্কিত হতে পারে? আসুন, সেই বিষয়টিই আমরা এখন দেখব।
স্বাস্থ্য সংকট ও পরিবেশের যোগসূত্র
বিশেষজ্ঞরা দীর্ঘদিন ধরে বলে আসছেন যে মানুষের স্বাস্থ্য এবং পরিবেশ একে অপরের সাথে গভীরভাবে জড়িত। জলবায়ু পরিবর্তন এবং পরিবেশ দূষণ বিভিন্ন রোগের বিস্তার এবং তীব্রতাকে প্রভাবিত করতে পারে। যদিও কোভিড-১৯ সরাসরি জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্ট নয়, তবে এটি অবশ্যই আমাদের শিখিয়েছে যে কীভাবে একটি বৈশ্বিক স্বাস্থ্য সংকট মুহূর্তের মধ্যে পুরো বিশ্বকে স্তব্ধ করে দিতে পারে। করোনার নতুন ঢেউ
দূষিত বাতাস এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ মানুষের শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারে, যা কোভিড-১৯-এর মতো রোগের ক্ষেত্রে পরিস্থিতি আরও জটিল করে তোলে। অন্যদিকে, বনভূমি ধ্বংস এবং জীববৈচিত্র্যের ক্ষতি নতুন নতুন রোগজীবাণুর উত্থান এবং বিস্তারের জন্য অনুকূল পরিবেশ তৈরি করতে পারে।
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব ও স্বাস্থ্য ঝুঁকি
জলবায়ু পরিবর্তন সরাসরি এবং পরোক্ষভাবে জনস্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলে। তাপমাত্রা বৃদ্ধি, বন্যা, খরা এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগ একদিকে যেমন মানুষের জীবন ও জীবিকাকে বিপন্ন করে তোলে, তেমনই অন্যদিকে বিভিন্ন রোগ যেমন – ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া এবং পানিবাহিত রোগের প্রকোপ বাড়াতে সাহায্য করে। কোভিড-১৯ মহামারী চলাকালীন আমরা দেখেছি যে স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থার উপর কতটা চাপ পড়তে পারে যখন একসঙ্গে অনেক মানুষ অসুস্থ হয়ে পড়ে। জলবায়ু পরিবর্তন জনিত কারণে যদি স্বাস্থ্য ঝুঁকি বাড়ে, তবে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হতে পারে। করোনার নতুন ঢেউ
সচেতনতাই আমাদের প্রধান হাতিয়ার
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ এখনও বিদ্যমান, তাই আমাদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা উচিত। একইসাথে, আমাদের পরিবেশ এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব সম্পর্কেও সচেতন থাকতে হবে। ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে শুরু করে সামাজিকভাবে পরিবেশ সুরক্ষার জন্য পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। বৃক্ষরোপণ, দূষণ কমানো এবং প্রাকৃতিক সম্পদের সঠিক ব্যবহার – এই ছোট ছোট কাজগুলোও দীর্ঘমেয়াদে আমাদের পরিবেশ এবং স্বাস্থ্যকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করতে পারে।
আসুন, আমরা সবাই মিলে একটি সুস্থ পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য কাজ করি। আপনার আশেপাশে পরিবেশ সুরক্ষার জন্য কী কী করা উচিত বলে আপনি মনে করেন? নিচে কমেন্ট করে আপনার ভাবনা জানান এবং এই গুরুত্বপূর্ণ বার্তাটি অন্যদের সাথে শেয়ার করুন।