বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’: জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব
বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপটি আজ সুস্পষ্ট লঘুচাপে রূপ নিয়েছে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। আগামী দুই-তিন দিনের মধ্যেই এটি ঘূর্ণিঝড়ে রূপ নিতে পারে। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়টির নাম হবে ‘ডানা’, যা কাতার-এর দেওয়া নাম। এটি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং ওড়িশা উপকূলে আঘাত হানতে পারে, তবে বাংলাদেশের খুলনা ও সুন্দরবন এলাকাতেও প্রভাব ফেলতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।
ঘূর্ণিঝড় ও জলবায়ু পরিবর্তন
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘূর্ণিঝড়ের তীব্রতা ও সংখ্যা বেড়ে গেছে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, সমুদ্রপৃষ্ঠের তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে এই ধরনের ঘূর্ণিঝড়গুলো আরও শক্তিশালী হচ্ছে। বাংলাদেশের উপকূলীয় অঞ্চলগুলো বিশেষত এই ধরনের প্রাকৃতিক দুর্যোগের প্রতি অতিমাত্রায় সংবেদনশীল। উপকূলীয় অঞ্চলের মানুষদের ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে ক্ষতির আশঙ্কা যেমন বেশি, তেমনি পরিবেশগত ক্ষতিও ব্যাপক হতে পারে।
সম্ভাব্য প্রভাবিত এলাকা
আবহাওয়া অধিদপ্তরের মতে, ঘূর্ণিঝড়টি ভারতের পশ্চিমবঙ্গ ও ওড়িশা উপকূলে আঘাত করতে পারে। তবে খুলনা ও বরিশাল বিভাগের উপকূলীয় এলাকাগুলোরও ক্ষতির আশঙ্কা রয়েছে। স্থানীয়ভাবে ভারী বৃষ্টিপাত ও ১-৮ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাস হতে পারে, যা উপকূলের জীবন ও সম্পদের জন্য মারাত্মক হুমকি।
সরকারের প্রস্তুতি ও সতর্কতা
পরিবেশ ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে আবহাওয়া অধিদপ্তর থেকে মৎস্যজীবীদের সমুদ্রে না যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। উপকূলীয় এলাকার মানুষদের দ্রুত নিরাপদ স্থানে আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড়ের আঘাত থেকে সুরক্ষার জন্য প্রস্তুতিমূলক পদক্ষেপ হিসেবে, স্থানীয় প্রশাসন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা পরিকল্পনা তৈরি করেছে।
ঘূর্ণিঝড়ের নাম ‘ডানা’ কেন?
ঘূর্ণিঝড়ের নামগুলো সাধারণত প্রাকৃতিক, ঐতিহাসিক বা সাংস্কৃতিক নাম থেকে নেওয়া হয়। সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় ‘ডানা’ নামটি মধ্যপ্রাচ্যের দেশ কাতার থেকে এসেছে। এই নামকরণ পদ্ধতি বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত, যা বিভিন্ন অঞ্চলের আবহাওয়া সংস্থাগুলোর মাধ্যমে পরিচালিত হয়।
জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় করণীয়
জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের তীব্রতা বাড়ছে। তাই এখনই উদ্যোগী হতে হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবহারের মাধ্যমে কার্বন নির্গমন কমাতে হবে। উপকূলীয় অঞ্চলে বনায়ন বৃদ্ধি করতে হবে এবং মানুষকে সচেতন করতে হবে।
উপসংহার
জলবায়ু পরিবর্তন ঘূর্ণিঝড়ের সংখ্যা ও তীব্রতা বাড়াচ্ছে। আমাদের উচিত সচেতন হওয়া এবং ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষতি কমানোর জন্য প্রস্তুত থাকা। পরিবেশ রক্ষা ও জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় সবাইকে একসঙ্গে কাজ করতে হবে।
আপনি কীভাবে সহায়তা করতে পারেন?
ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব থেকে বাঁচতে ও সচেতনতা বাড়াতে তথ্য শেয়ার করুন। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে আরও জানতে ও নিজে থেকে পদক্ষেপ নিতে আগ্রহী হোন!