নওগাঁর তুলসীগঙ্গা নদীর কচুরিপানা অপসারণ শুরু করেছেন স্বেচ্ছাসেবীরা। এ উদ্যোগ শুধু একটিমাত্র স্থানীয় কার্যক্রম নয়; বরং এটি পরিবেশ রক্ষা এবং সামগ্রিক জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। জাতীয় যুব দিবস উপলক্ষে নেওয়া এই কর্মসূচি নদী ও জলাশয় পরিষ্কার রাখার গুরুত্বকে পুনর্ব্যক্ত করে। এমন উদ্যোগ কেবল স্থানীয় জনসংখ্যার পরিবেশ সচেতনতা বাড়িয়েই থেমে থাকবে না, বরং দেশের অন্যান্য এলাকায় একই ধরনের উদ্যোগের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে। তুলসীগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার
স্বেচ্ছাসেবী প্রচেষ্টার শক্তি ও সহযোগিতা
নদী পুনরুদ্ধারে স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনগুলোর সমন্বিত প্রচেষ্টা প্রশংসার দাবি রাখে। বিডি ক্লিন নওগাঁ জেলা শাখা, ওয়াইএসএফ, এবং স্কাউট নওগাঁ শাখা এ কার্যক্রমে নেতৃত্ব দিচ্ছে। সরকারি সংস্থাগুলোর (যেমন যুব উন্নয়ন অধিদপ্তর ও পানি উন্নয়ন বোর্ড) সহায়তা প্রমাণ করে যে, সরকারি-বেসরকারি যৌথ প্রচেষ্টায় পরিবেশগত সমস্যার সমাধান সম্ভব। এমন প্রকল্পগুলো শুধু পরিবেশ রক্ষায় নয়, বরং যুব সমাজকে সামাজিক উন্নয়নের কাজে যুক্ত করার ক্ষেত্রেও উদাহরণ সৃষ্টি করে।
নদীর ইতিহাস ও বর্তমান অবস্থা
তুলসীগঙ্গা নদী একসময় নওগাঁ শহরের প্রাণ ছিল। দিনাজপুর থেকে উৎপন্ন হয়ে জয়পুরহাট হয়ে নওগাঁতে প্রবাহিত হয়ে ছোট যমুনার সঙ্গে মিশেছে। কিন্তু কয়েক বছর আগে পুনঃখননের পরও, কচুরিপানার আধিক্য পানিপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করেছে। এর ফলে নদীর গুরুত্ব ও পরিবেশগত অবস্থা আবারও ঝুঁকিতে পড়েছে। নদীর স্বাস্থ্যহানি শুধু নওগাঁর নয়, দেশের সামগ্রিক পরিবেশের ওপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলে।
কেন এই উদ্যোগ জরুরি?
কচুরিপানা অপসারণের কার্যক্রমের মূল লক্ষ্য নদীর স্বাভাবিক প্রবাহ ফিরিয়ে আনা। অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমানের মতে, প্রতিটি জেলায় জলাশয় পরিষ্কারের আহ্বান একটি সময়োচিত পদক্ষেপ। যুব ও ক্রীড়া উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়ার প্রেরণা সাড়া দিয়ে এ কার্যক্রম শুরু করা হয়েছে। এটি শুধু একটি প্রাথমিক পদক্ষেপ নয়; বরং দীর্ঘমেয়াদী সচেতনতা সৃষ্টির প্রয়াস। পানি প্রবাহ স্বাভাবিক থাকলে তা কৃষি, মৎস্য, এবং জীববৈচিত্রের ওপর ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।
স্বেচ্ছাসেবীদের ভূমিকা ও উদ্দীপনা
এ ধরনের উদ্যোগে স্বেচ্ছাসেবকদের ভূমিকা প্রশংসনীয়। একসঙ্গে কাজ করার মাধ্যমে তারা পরিবেশগত পরিবর্তনের পথে হাঁটছে। জলবায়ু পরিবর্তনের সময়, এমন উদ্যোগগুলো আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে, কারণ স্থানীয় প্রচেষ্টা বৈশ্বিক প্রভাব রাখতে পারে। তুলসীগঙ্গা নদী পুনরুদ্ধার
উপসংহার
তুলসীগঙ্গা নদীর কচুরিপানা অপসারণের উদ্যোগটি শুধুমাত্র একটি স্থানীয় প্রকল্প নয়, এটি দেশের পরিবেশ পুনরুদ্ধারে একটি মাইলফলক। স্বেচ্ছাসেবী দলগুলোর উৎসাহ ও সরকারি সহযোগিতা প্রমাণ করে যে, আমাদের একসঙ্গে কাজ করে টেকসই পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। এরকম সচেতনতামূলক উদ্যোগগুলো স্থানীয় পরিবেশ রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সচেতন ও প্রস্তুত হতে সহায়তা করে।